—প্রতীকী ছবি। Sourced by the ABP
এক মাসে এক কোটি! আপাতত এটাই বঙ্গ বিজেপির অঘোষিত স্লোগান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনে বাংলায় এসে দলকে এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু হাতে সময় মাত্র এক মাস। এত অল্প সময়ে ‘বিরাট’ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কী ভাবে সম্ভব, সেই ভাবনায় শীর্ষ নেতারা।
বিজেপি সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে শেষ বার যখন সদস্য সংগ্রহ অভিযান হয়েছিল, তখন ছ’মাসে ৮৭ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ করা গিয়েছিল। কিন্তু এ বার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৩ লক্ষ বাড়লেও সময় কমে দাঁড়িয়েছে এক মাস। আদৌ লক্ষ্যপূরণ সম্ভব কি না, সেই প্রশ্নে বিজেপির অন্দরেও ভিন্নমত রয়েছে। যদিও দলের একাংশের যুক্তি, সেই সময়ে দলের তিন জন বিধায়ক, দু’জন সাংসদ ছিলেন। এখন দু’টি সংখ্যাই কয়েক গুণ বেড়েছে।
নির্দিষ্ট পাটিগণিত মেনে বিজেপিতে সদস্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছে। ‘দলবদলু’দের বাদ দিয়ে ধরলে এই মুহূর্তে বিজেপির বিধায়ক-সংখ্যা ৬৯। সাংসদ-সংখ্যা ১৪। বিধায়ক পিছু পাঁচ হাজার ও সাংসদ পিছু ১০ হাজার সদস্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সংগৃহীত সদস্যের অন্তত ১০%-কে ‘সক্রিয় সদস্য’ করে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই হিসেবে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ সদস্যপদ উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য বিজেপি। বুথ পিছু দু’শো সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে ৫৬ হাজার বুথে বিজেপির সাংগঠনিক লোক রয়েছে বলে সূত্রের দাবি। লক্ষ্যমাত্রা প্রতিটি মণ্ডলে ১০ হাজার সদস্য সংগ্রহের। এখন রাজ্যে বিজেপির ১৩৪৩টি মণ্ডল। সূত্রের খবর, জনবিন্যাসগত কারণে তারা অন্তত ৩৫০টি মণ্ডল আপাতত ছেড়ে রাখছে। বাকি মণ্ডলে যাতে লক্ষ্য পূরণ করা যায়, তার জন্য নেতাদের ঝাঁপানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও এই পরিকল্পনা নিয়ে দলেই দ্বিধা রয়েছে। এক বিধায়ক বলেন, “কঠিন কাজ। এই সময়ের মধ্যে এত সংখ্যক সদস্য সংগ্রহ সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না।” এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, “চাইলেও উৎসবের দিনগুলিতে সাংগঠনিক কাজ করতে পারব না। হাতে সময় খুবই কম।” যদিও সদস্য সংগ্রহ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “অমিত শাহ আমাদের নেতা। তিনি যখন লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন, পূরণ করব।” কিন্তু এত কম সময়ে? শমীকের জবাব, “পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে।”
সূত্রের খবর, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সদস্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া শেষ হবে। ডিসেম্বরে শুরু হবে সাংগঠনিক রদবদলের প্রক্রিয়া। সদস্য সংগ্রহ অভিযান নিয়ে ১৫ নভেম্বরের পরে পর্যালোচনা বৈঠক হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হওয়ার আগে পর্যন্ত সদস্য হতে চেয়ে চার লক্ষ ৮২ হাজার মিসড কল এসেছে। কিন্তু পুরো ‘টেকনিক্যাল’ প্রক্রিয়া শেষ করে সদস্য হয়েছেন দু’লক্ষ ২২ হাজার জন। শাহ যে দিন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করেছেন, সে দিন রাজ্য জুড়ে প্রায় ৩৫ হাজার সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। উপর তলা থেকে কড়া নির্দেশ গিয়েছে, বুথ থেকে রাজ্য স্তর পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মীকে অন্তত একশো জন সক্রিয় সদস্য করতে হবে। তা না-হলে তাঁকে সাংগঠনিক পদে রাখা হবে না।