রাখি পরানো হচ্ছে কানহাইয়া কুমারকে। বৃহস্পতিবার কলকাতায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
স্বাধীনতা দিবসে কলকাতায় দাঁড়িয়ে দেশে বিজেপি জমানাকে ব্রিটিশ শাসনের সঙ্গে তুলনা করলেন কানহাইয়া কুমার। সিপিআইয়ের তরুণ নেতার মতে, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের সঙ্গে যুঝতে হলে বিরোধীদের প্রতি দিন রাস্তায় থাকতে হবে।
ব্রিটিশ রাজের প্রথম রাজধানী কলকাতা শহরে বৃহস্পতিবার ‘নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-বিরোধী যুক্ত মঞ্চে’র আয়োজনে জোড়াসাঁকো থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত সম্প্রীতির পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন কানহাইয়া। পরে রাজাবাজার ও আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় রোডের সংযোগস্থলের কাছে জনসভায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘ব্রিটিশদের নীতি ছিল ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’। তারা চাইত, ভারতের মানুষ যাতে নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্বে ব্যস্ত থাকে। বিজেপিও এখন তা-ই করছে। তারা কখনও ধর্মের নামে, কখনও নাগরিকপঞ্জির নামে মানুষকে ভাগ করছে, দ্বন্দ্ব লাগাচ্ছে।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘বাণিজ্যের নাম করে এখানে এসে ব্রিটিশেরা ভারতকে পরাধীন করেছিল। এখনকার শাসকেরা ‘বিকাশে’র নাম করে এসে গণতন্ত্র, সংবিধান, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে পদানত করছে। লাভবান হচ্ছে শুধু অম্বানী-আদানিরা!’’
কানহাইয়ার মতে, দেশের অর্থনীতির হাল যে শোচনীয়, সে দিকেই মানুষের নজর ফেরাতে হবে। রুটি-রুজি, রোজগারের ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতাকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতিকে পরাস্ত করতে হবে। তার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে বিরোধীদের। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তায় নেমে প্রতি দিন মানুষকে বোঝাতে হবে তাঁদের আসল সমস্যার কথা। তাঁদের দুর্দশায় পাশে থাকতে হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে জোট বেঁধে লড়তে হবে বিরোধীদের।’’ কলকাতায় সভা করলেও রাজ্যের বিষয় বা তৃণমূল প্রসঙ্গে এ দিন অবশ্য কোনও কথা বলেননি কানহাইয়া। কর্মসূচির উদ্যোক্তাও তাঁর দল সিপিআই বা বামফ্রন্ট ছিল না। বামফ্রন্টের বাইরের নানা সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছিল প্রসেনজিৎ বসুদের মঞ্চ। সঙ্ঘ-বিজেপিকে আক্রমণ করেই সেখানে কানহাইয়া বলেছেন, ‘‘আরএসএস জন্মানোর আগেও ভারত ছিল! আরএসএসের পরেও থাকবে!’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর) ওই সভায় দাবি করেছেন, বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সর্বদল আলোচনা হোক। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোনও ভাবেই বাংলায় নাগরিকপঞ্জি করতে দেওয়া যাবে না। সর্বদল আলোচনা হলে স্পষ্ট হয়ে যাবে, কে কোন দিকে আছে।’’