Nisith Pramanik

নিশীথের গাড়িতে হামলার প্রতিবাদ, জেলায় জেলায় থানার সামনে বিক্ষোভে বিজেপির নেতা-কর্মীরা

রবিবার কোচবিহার থেকে পুরুলিয়া, জলপাইগুড়ি থেকে দুই বর্ধমান— বিভিন্ন জেলার থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে বিজেপি। অনেক জায়গায় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের হাতে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৫৮
Share:

রবিবার কোচবিহার জেলায় বিক্ষোভে বিজেপি নেতা-কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের গাড়িতে হামলার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশে রবিবার কোচবিহার থেকে পুরুলিয়া, জলপাইগুড়ি থেকে দুই বর্ধমান— বিভিন্ন জেলার থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন তাঁরা। অনেক জায়গায় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের হাতে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।

Advertisement

শনিবার দুপুরে দিনহাটার বুড়িরহাট এলাকায় নিশীথকে কালো পতাকা দেখানোর পাশাপাশি তাঁর কনভয়ের গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বুড়িরহাট এলাকায় নিশীথ গেলে মারমুখী হয়ে ওঠেন দু’দলের সমর্থকেরা। দু’পক্ষেরই অভিযোগ, সে সময় এলাকায় গুলি-বোমা ছোড়া হয়। এতে নিশীথের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই ঘটনার পর তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের পাল্টা অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ, বেছে বেছে তাদের দলের কর্মীদেরই গ্রেফতার করছে পুলিশ। এর পর রাজ্য জুড়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচির আহ্বান করেন সুকান্ত।

রবিবার কোচবিহার জেলা কোতোয়ালি, পুন্ডিবাড়ি, ঘোকসাডাঙ্গা, তুফানগঞ্জ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিজেপি সমর্থকেরা। কোতোয়ালি থানায় বিধায়ক নিখিলের নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। নিখিলের দাবি, ‘‘শনিবার পরিকল্পনা মাফিক নিশীথের উপর হামলা চালায় তৃণমূল। তাঁকে কালো পতাকা দেখায়। গাড়ি ভাঙচুর করে। পাশাপাশি, শনিবার রাত থেকে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ঘরবাড়ি এবং দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। বিনা দোষে আমাদের ২১ জন কার্যকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাই আমরা রাজ্যের পাশাপাশি জেলায় থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছি।’’

Advertisement

পুরুলিয়া শহরের সদর থানার সামনে বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচি। —নিজস্ব চিত্র।

অবশ্য এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি প্রাক্তন মন্ত্রী তথা রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘যারা দোষ করেছে, তাদেরই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজেপির লক্ষ্য হচ্ছে, সারা রাজ্য জুড়ে বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি করা। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই এদের আসল লক্ষ্য।’’

কোচবিহারের মতোই জলপাইগুড়িতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিজেপি। রবিবার বিকাল ৪টে নাগাদ এই কর্মসূচিতে ছিলেন দলের মাল বিধানসভা আহ্বায়ক রাকেশ নন্দী, সংখ্যালঘু সেলের জেলা নেতৃত্ব অখিল সরকার এবং উত্তর মণ্ডলের সভাপতি প্রদীপ তিরকে, মাল টাউন মণ্ডল সভাপতি নবীন সাহা। বিজেপি কর্মীরা সদলবলে মিছিল করে এসে থানায় বিক্ষোভ দেখান। পরে স্মারকলিপিও দেন। অখিল বলেন, ‘‘দিনহাটায় আমাদের নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপর হামলা হয়েছে। তাঁর গাড়িতে বোমা মারা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করছি। এতেই বোঝা যায়, রাজ্যে মানুষের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র কোথায় এসে নেমেছে। এর প্রতিবাদে আমাদের এই কর্মসূচি।’’

রবিবার পুরুলিয়া এবং দুই বর্ধমানেও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। দুপুরে পুরুলিয়া শহরের সদর থানার সামনে এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা, পুরুলিয়া জেলার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো-সহ জেলা বিজেপি নেতা-কর্মীরা। জ্যোতির্ময়ের দাবি, ‘‘রাজ্য সরকারের মদতে যে ভাবে নিশীথ প্রামাণিকের উপর হামলা করা হল, এ রকম নজিরবিহীন ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে ছাড়া অন্য কোথাও সম্ভব নয়। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও জঘন্য ঘটনা।’’

পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা থানা রবিবার দুপুরে মিছিল করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। বিক্ষোভের পাশাপাশি কাঁকসা থানায় গিয়ে স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান সদরের বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি রমন শর্মা, কাঁকসা ২ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঢালি-সহ দলের কর্মী-সমর্থকেরা। অন্য দিকে, আসানসোলের হীরাপুর থানা ঘেরাও করেন বিজেপি কর্মীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement