সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ‘বঞ্চিত’দের নিয়ে ধর্মতলায় সমাবেশের আগে, প্রচার ও প্রস্তুতি থেকেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সভা করতে আসছেন বলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ভয়ে’ ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না! তৃণমূল অবশ্য বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে।
ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে কাল, বুধবার বিজেপির সভায় উপস্থিত থাকার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের। তার আগে শেষ বেলার প্রচারে সোমবার শহরে জোড়া কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্তের নেতৃত্বে গড়িয়াহাট থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার কর্মী-সমর্থকেরা। অপর দিকে উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার ডাকে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে জনসভা করে বিজেপি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রচার কর্মসূচি থেকে তৃণমূলকেই নিশানা করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির সভার জন্য মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী এ দিন সভাস্থল পরিদর্শনে এসেছিল। কলকাতা পুলিশের আধিকারিকেরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এরই পাশাপাশি চলছে রাজনৈতিক প্রস্তুতি। গড়িয়াহাট থেকে মিছিলে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ প্রমুখ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে আক্রমণ করে সুকান্ত বলেন, ‘‘শুনলাম, লোকসভার প্রস্তুতি নিয়ে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বৈঠক হল। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল না। উনি নিজেও আসেননি। শুনেছেন, অমিত শাহ কলকাতায় আসছেন। সেই ভয়ে ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না!’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘২৯ তারিখ তৃণমূলের মতো বিরিয়ানি, ডিম-ভাতের ভিড় হবে না! তৃণমূল তো ভয় দেখিয়ে লোক আনে। আমাদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মানুষ আসবেন। আমরা পয়সা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ট্রেন ভাড়া করেছি। যত মানুষ আসতে চাইছেন, তার একাংশ মানুষকে আমরা আনতে পারছি। কারণ, সবাইকে আনতে গেলে যত ট্রেন, বাস ভাড়া করতে হবে, সেই টাকা আমাদের নেই। তার পরেও রেকর্ড ভিড় হবে।’’
তমলুকে এ দিনই রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ কটাক্ষ করেছেন, ‘‘বিজেপির সভায় সিপিএম কিছু লোক পাঠাচ্ছে। আর শীতের দিন। তাই কোথাও কোথাও বলে বেড়াচ্ছে, আমরা নিয়ে যাব, খাওয়াব, চিড়িয়াখানা ঘুরে বাড়ি পাঠাব। ফলে শুভেন্দু, সুকান্তকে দেখবে আর চিড়িয়াখানায় শিম্পাঞ্জি বাবুটাকে দেখে বাড়ি যাবে!’’ পাশাপাশিই তিনি ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের ‘শহিদ তর্পণে’র আলাদা তাৎপর্য আছে। একই জায়গায় সভা করলেও সেই ঐতিহ্যের সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। কুণালের মন্তব্য, ‘‘কাকের পিছনে ময়ূরপুচ্ছ গুঁজে দিলে সে ময়ূর হয় না, কাকই থাকে!’’