TMC

দলবদলে নজর, জোর আরএসএস-সমন্বয়েও

বর্ধমান শহরে নবাবহাটের কাছে এক উপনগরীতে একটি হোটেলে শনিবার সন্ধ্যায় বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে হাজির ছিলেন জে পি নড্ডা।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৪২
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

অন্য দল থেকে নিচুতলার কর্মীরা আসতে চাইলে, তাঁদের বিজেপিতে নেওয়ার ক্ষেত্রে টালবাহানা করা যাবে না। তবে বুথ স্তরে কমিটি গড়ার ক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে একেবারে ‘নিজস্ব’ লোকদের। সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সাম্প্রতিক সফরের পরে, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের থেকে এমন বার্তা মিলেছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। পাশাপাশি, বুথ স্তরের কর্মীদের দিকে নজর এবং আরএসএসের সঙ্গে সমন্বয় বৃদ্ধি— সংগঠন শক্ত করতে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে, দাবি ওই সূত্রটির।

Advertisement

বর্ধমান শহরে নবাবহাটের কাছে এক উপনগরীতে একটি হোটেলে শনিবার সন্ধ্যায় বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে হাজির ছিলেন জে পি নড্ডা। দলীয় সূত্রের দাবি, অন্য দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের ঘটনা নিচু স্তর পর্যন্ত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান নড্ডা। বুথ স্তরের সংগঠন এবং আরএসএসের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকে তিনি জোর দেন। সেই সঙ্গে অন্য দল থেকে আসা নিচুতলার কর্মীদের ভোটের কাজে কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, সেই পরিকল্পনা তৈরির কথা বলা হয়েছে।

দলের এক নেতার দাবি, ‘‘প্রতি বুথে একেবারে বিজেপির নিজস্ব লোক হিসেবে পরিচিত ১০ জনকে নিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ রয়েছে। সেখানে অন্য দল থেকে আসা কর্মীদের নেওয়ার কথা বলা হয়নি। অর্থাৎ, মূল সংগঠনে এখনও নিচু স্তরের দলত্যাগী কর্মীদের নেওয়ার ভাবনা নেই।’’

Advertisement

বিজেপি সূত্রের দাবি, তৃণমূলের আরও কিছু নেতা বিজেপিতে আসবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তা নিয়েও কোর কমিটির বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। বৈঠকে দলের কেউ-কেউ দাবি করেন, বিজেপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকেই দলে আসতে চাইছেন। দলের একটি সূত্র জানায়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেননের মতো নেতারা জেলা স্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশ দিয়েছেন, অন্য দল ছেড়ে কর্মীরা আসতে চাইলে, টালবাহানা করা চলবে না। মণ্ডল সভাপতিরা বেঁকে বসলে পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাতেও কেউ ‘অবুঝ’ হলে, দলীয় স্তরে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, শুধু সংগঠন সাজালে হবে না, তার বিশদ বিবরণ দিতে হবে আরএসএসকে। সে জন্য প্রথমে জেলা স্তরে আরএসএসের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। বুথ স্তরে কোথায় সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে, কোন বুথে কী রণনীতি তৈরি করতে হবে, সে সম্পর্কে তথ্য আদানপ্রদান হবে। গোপন এই বৈঠকের জায়গা শেষ মুহূর্তে স্থির করার কথা বলা হয়েছে। তার রিপোর্ট রাজ্য স্তরে যাবে।

পূর্ব বর্ধমান জেলার এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘সাংগঠনিক কার্যকলাপের জন্য প্রতি সপ্তাহে আরএসএসের সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ রয়েছে। ধীরে-ধীরে সে বৈঠক বিধানসভা স্তরে নামানো হবে।’’ দল প্রভাবিত ছাত্র সংগঠনকে আরও জোরদার আন্দোলনে নামতে হবে বলেও শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ রয়েছে, দাবি বিজেপি নেতাদের।

বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য প্রকাশ্যে এমন কোনও বার্তার কথা স্বীকার করছেন না। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং সহ সভাপতি তথা রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনেই বলেন, ‘‘সারা বছরই আরএসএসের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক হয়। নতুন কোনও নির্দেশ নেই। আর বুথ কমিটিতে অন্য দল থেকে আসা লোকদের নেওয়া যাবে না, এমন নির্দেশও কেউ দেননি।’’

তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বেইমানদের নিয়ে খেলতে নেমেছে বিজেপি। পুরনো বিজেপি কর্মীদের কথা ভেবে দুঃখ হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement