BJP

‘লোকসভা নির্বাচনে শিক্ষা পাবে তৃণমূল’, তোপ বিজেপির তথ্য অনুসন্ধান দলের, ‘২০২১’ মনে করাল তৃণমূল

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মাথায় শ্যুট করা’ মন্তব্য নিয়েও সরব হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বাংলায় তোলাবাজির রাজত্ব চলছে বলে তোপ দেগেছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১১:৪২
Share:

মীনাদেবী পুরোহিতের সঙ্গে দেখা করল বিজেপির পাঁচ সদস্যের দল। ছবি টুইটার।

বিজেপির নবান্ন অভিযানে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগে কলকাতার মাটিতে পা রেখে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে সরব হল পদ্মশিবিরের পাঁচ সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান দল। ‘‘বাংলায় জঙ্গলরাজ চলছে। ২০২৪ সালে বাংলার মানুষ শিক্ষা দেবে’’, তৃণমূল সরকারকে এ ভাষাতেই নিশানা করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা।

Advertisement

কলকাতায় আসার পর বিজেপির পাঁচ সদস্যের দলের সদস্য ব্রিজলাল বলেন, ‘‘বাংলায় জঙ্গলরাজ চলছে। কাটমানি, তোলাবাজির রাজত্ব চলছে। কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি সামনে আসছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের দুর্নীতি ফাঁস হয়েছে। বাংলার মানুষ সব দেখছে। এখানে গণতন্ত্র নেই, তামাশা চলছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বাংলার মানুষ উচিত শিক্ষা দেবে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, নবান্ন অভিযানে অংশ নেননি, এমন অনেক বিজেপি কর্মীকেও পাকড়াও করা হয়েছে। পুলিশি অত্যাচারের নিন্দায় সরব হয়েছেন তাঁরা।

গত মঙ্গলবার রাজ্যে ‘দুর্নীতি’র প্রতিবাদে নবান্ন অভিযান কর্মসূচি করে রাজ্য বিজেপি। যা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলকাতা ও হাওড়া। এসি পদমর্যাদার আধিকারিক-সহ একাধিক পুলিশকর্মী জখম হন। কলকাতায় পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। একাধিক বিজেপি কর্মীও জখম হয়েছেন বলে দাবি। আহত হন কলকাতা পুরসভার ২২ ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মীনাদেবী পুরোহিত।

Advertisement

বিজেপির নবান্ন অভিযানে জখম হন কলকাতা পুলিশের আধিকারিক দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, ‘‘আমি ওই অফিসারকে বলেছি, আমি আপনাকে স্যালুট করি। আমার সামনে যদি কেউ পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিত, পুলিশকে মারত, আমি (নিজের কপালে আঙুল ঠেকিয়ে) তাদের মাথায় শ্যুট করতাম!’’ অভিষেকের এই মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতিতে।

এই প্রসঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য ব্রিজলাল বলেন, ‘‘এখানে এক নেতা রয়েছেন, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো। তিনি দায়িত্বে থাকলে মাথায় গুলি মারতেন, এটা আমরা বুঝেছি।’’ জবাবে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপির সংসদীয় দল না কি যেন একটা এসেছে, এরা তো রাজনৈতিক পর্যটক। গন্ডগোল করতে চেয়েছিল, বড় ধরনের গোলমাল করতে চেয়েছিল। পুলিশকে আক্রমণ করেছিল, যাতে পুলিশকে রিঅ্যাক্ট করতে হয়। অস্থিরতা তৈরি করতে চেয়েছিল, কিন্তু হয়নি। ওদের দল ইচ্ছেমতো ঘুরে বেরিয়ে সমালোচনা করতেই পারেন। উত্তরপ্রদেশ বা ত্রিপুরা হলে মেরে বের করে দিত।’’

কলকাতায় বিজেপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে পাল্টা বিঁধেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘‘ওদের অনুরোধ করব, যে পুলিশ আধিকারিক আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁর বয়ান নিন। আহত পুলিশকর্মীদের বয়ান নিন। বড়বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলুন।’’ তৃণমূলের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “বিজেপি বাংলায় সুবিধা করতে পারবে না। ২০২১ সালের নির্বাচনেই তা দেখেছে মানুষ।”

প্রসঙ্গত, নবান্ন অভিযানে দলের কর্মীদের উপর অত্যাচারের তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। ঘটনাস্থলে গিয়ে, আহত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে ওই দিনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবে কমিটি। পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা তথা রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ ব্রিজলাল, লোকসভার বিজেপি সাংসদ কর্নেল রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর, লোকসভার সাংসদ অপরাজিতা সারেঙ্গি, রাজ্যসভার সাংসদ সমীর ওরাও এবং পঞ্জাবের বিজেপি নেতা সুনীল জাখর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement