Abhishek Banerjee

এ বেলায় ১৪৪ ভ্যানিশ! অভিষেকের ধর্নাকে এক সুরে বিঁধল বিজেপি, বাম, কংগ্রেস, পাল্টা তৃণমূল

তৃণমূল তথা অভিষেক যে দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাতে সহমত সিপিএম এবং কংগ্রেস। তবে পথ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে তাঁদের। বাম-কংগ্রেসের বক্তব্য, কথায় কথায় যারা মামলা করে, তারা কেন আদালতে যাচ্ছে না?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২০:২৪
Share:

ধর্না মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

রাজভবনের দোরগোড়ায় তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার থেকে ধর্না শুরু করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যত দিন না রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ‌তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করছেন, তত দিন ধর্না চালিয়ে যাবেন। তৃণমূল তথা রাজনৈতিক মহলের অনেকেই যখন অভিষেকের এই ধর্নায় মমতার ছায়া দেখতে পাচ্ছেন, তখন ধর্নার জায়গা নিয়ে এক যোগে তৃণমূলকে বিঁধল বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস। গেরুয়া শিবির এক ধাপ এগিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপও দাবি করে ফেলল। পাল্টা তৃণমূল জানাল, তারা আবেদন করেছিল প্রশাসনের কাছে, তাই ওই জায়গায় ধর্না হচ্ছে।

Advertisement

রাজভবনের উত্তর ফটকের অদূরে রেড ক্রস প্লেসের যে জায়গায় ধর্না হচ্ছে, সেখানে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকে সারা বছর। বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘১৪৪ ধারা কি ভ্যানিশ হয়ে গেল? সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে আইন ভাঙছে তৃণমূল। যা ভবিষ্যতের বিপদ সঙ্কেত। এর পর বিরোধীরা যদি ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে এমন এলাকায় জমায়েত নিয়ে যায় তা হলে দু’টি জিনিস হবে। হয়, ১৪৪ ধারা ভাঙবে, না হলে পুলিশকে গুলি চালাতে হবে।’’ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি আরও বলেন, ‘‘গঙ্গার উল্টো পারে নবান্নের সামনে যদি কোনও বিরোধী দল জমায়েত করে, তখন কি পুলিশ নীরব থাকবে? হাই কোর্টের নাকের ডগায় এটা হচ্ছে। আদালতের উচিত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ করা।’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘দিল্লির নাটক জমেনি দেখে কলকাতায় নতুন নাটক হচ্ছে। পুলিশের সাহায্যে পাঁচতারা বন্দোবস্ত করে ১৪৪ ধারা ভাঙা হচ্ছে। ওই এলাকায় বা রাজ্যের অন্যত্র যেখানে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকে সেখানে যদি আমরা যাই, তা হলে পুলিশ এ রকম শান্ত, সুবোধ থাকবে তো?’’ প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘আমরা ওখানে ধর্না করতে গেলে বলবে ১৪৪ ধারা রয়েছে। ওঁর পিসির সরকার, তাই ওঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।’’ সেই সঙ্গে কংগ্রেস নেতার আরও প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যপাল কি টাকা দেবেন নাকি। ওখানে গিয়ে বসে থাকার মানে কি! দিল্লিতে যখন তৃণমূল গেল, তখন বঙ্গভবনে রাজ্যপাল ছিলেন। সেখানে না গিয়ে এখানে নাটক চলছে। আসলে তৃণমূল, বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে সবটা করছে। দু’দলই চায়, গরিব মানুষ টাকা না-পাক, ইস্যুটা বেঁচে থাকুক।’’

Advertisement

পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অন্য দল আবেদন করেনি, তাই পায়নি। আমরা করেছি, তাই পেয়েছি। তার চেয়েও বড় কথা হল, গরিব মানুষের অধিকার, মানুষের দাবিতে আন্দোলন চলছে। বিরোধীদের সঙ্গে মানুষের কোনও যোগ নেই বলেই এ সব কথা বলছে।’’

প্রসঙ্গত, তৃণমূল তথা অভিষেক যে দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাতে সহমত সিপিএম ও কংগ্রেস। তবে পথ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে তাঁদের। বাং-কংগ্রেসের বক্তব্য, বাংলার শাসকদল তথা রাজ্য সরকার যখন সব কিছু নিয়ে আদালতে যায়, তখন এই বিষয়টি নিয়ে মামলা কেন করছে না? কংগ্রেসের সৌম্য বলেন, ‘‘রাজস্থানের অশোক গহলৌত সরকার মামলা করে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা আদায় করেছে। কিন্তু বাংলার সরকার যায়নি। এতেই বোঝা যায়, সবটা সাজানো চিত্রনাট্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement