পুলিশ বিজেপির কনভয় আটকানোর পর। ছবি: টুইটার থেকে
মৃত কর্মীদের দেহ পুলিশি বাধায় কলকাতায় আনা গেল না ঠিকই। কিন্তু সন্দেশখালি কাণ্ডে পিছু হঠতে নারাজ বিজেপি। প্রশাসনের সঙ্গে সঙ্ঘাত আরও তীব্র করার পথেই হাঁটতে শুরু করল গেরুয়া শিবির। সোমবার বন্ধের ডাক দেওয়া হল গোটা বসিরহাট পুলিশ জেলায়। সারা রাজ্যে কালা দিবস পালনের ডাকও দেওয়া হল। তাতেই শেষ নয়, ১২ জুন হবে লালবাজার অভিযান। সন্দেশখালি থেকে ফেরার পথেই ঘোষণা করে দিলেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। অন্য দিকে, সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্যকে অ্যাডভাইজারি নোট পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। শাসক দলের তরফেও এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। এ দিন রাতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটি বিজেপি-র পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত। আমরা এর যথাযথ উত্তর দেব।”
সন্দেশখালি পরিদর্শনের পর দুই বিজেপি কর্মীর দেহ আনার পথে দফায় দফায় পুলিশ কনভয় আটকে দেয়। প্রথমে মালঞ্চ মোড়ে আটকালেও সেখানে পুলিশের সঙ্গে এক দফা ধস্তাধস্তির পর বাধা টপকে কনভয় এগিয়ে যায়। কিন্তু মিনাখাঁর বামনপুকুরে এসে অবরুদ্ধ হয়ে যায় কনভয়। কারণ রাস্তায় আগে থেকেই রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাস্তা আটকে রেখেছিল পুলিশবাহিনী। কনভয় আটকে দেওয়ায় বামনপুকুরেই প্রথমে সৎকারের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ সেখানেই বিক্ষোভ-স্লোগান চালানোর পর পিছু হঠেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেখান থেকেই মৃতদেহ সন্দেশখালিতে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হয়।
তার পরই রাহুল সিংহ দলের কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আগামিকাল সোমবার বসিরহাট মহকুমায় সকাল ছ’টা ১২ ঘণ্টার বন্ধ পালন করবে বিজেপি। এ ছাড়া রাজ্য জুড়েই কালা দিবস পালন করা হবে। তার পর বুধবার কলকাতায় ধিক্কার মিছিল করা হবে দলের তরফে।
রবিবার সন্দেশখালি থেকে কলকাতায় ফেরার সময়েই বিজেপি নেতৃত্ব ইঙ্গিত দিয়ে দেন যে, বিক্ষোভের আঁচ আছড়ে পড়বে কলকাতাতেও। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘১২ জুন কলকাতায় আমাদের রাজ্য সদর দফতর থেকে প্রতিবাদ মিছিল বেরোবে। সাংসদরা থাকবেন, বিধায়করা থাকবেন। থাকবেন রাজ্যের প্রায় সব শীর্ষনেতাই। মিছিল লালবাজার অভিমুখে যাবে।’’
আরও পড়ুন: মিনাখাঁয় পুলিশের বাধায় পিছু হঠল বিজেপি, ২ কর্মীর দেহ ফিরছে সন্দেশখালিতেই
আরও পড়ুন: প্রদীপের বাড়ির সামনে চাপ চাপ রক্ত, পড়ে রয়েছে বুলেটের খোল, হাটগাছিয়ায় জারি ১৪৪ ধারা
রাজ্য বিজেপি যে আকারের কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, তা যে খুব ছোটখাট হবে না, পুলিশ তা ভলই বুঝতে পারছে। তবে কোনও বড়সড় মিছিলকে লালবাজারের সামনে পৌঁছতে দেওয়ার ঝুঁকি নেওয়া হবে না বলেই পুলিশ সূত্রের খবর। তাই মাঝপথেই আটকে দেওয়া হতে পারে বিজেপির প্রস্তাবিত মিছিলকে। সে ক্ষেত্রে ১২ জুন ফের অশান্তির আশঙ্কা থাকছে। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ উত্তাল হতে পারে পুলিশ-বিজেপি টানাপড়েনে।