চৈত্র মাসের শুক্ল প্রতিপদকে কেন নতুন বছরের সূচনা মনে করা হয়? প্রতীকী ছবি।
বাংলা বৈশাখের প্রথম দিনটিকে নববর্ষের সূচনা মনে করে। পয়লা বৈশাখ গোটা রাজ্য উৎসবে মাতে। যদিও সরকারি কাজকর্মের হিসাবে ১ জানুয়ারিকেই বছর শুরুর দিন হিসাবে মানা হয়। তবে গেরুয়া শিবিরের কাছে নববর্ষ শুরু হয় চৈত্র মাসের শুক্ল প্রতিপদ তিথিতে। যেটা এ বার ২২ মার্চ, বুধবার।
মঙ্গলবার অমাবস্যা। আর চান্দ্রমাসের হিসাবে প্রতি পূর্ণিমা ও অমাবস্যার পরের দিনকে প্রতিপদ তিথি বলা হয়। এই দিনটি পালনের জন্য কলকাতায় কর্মসূচিও নিয়েছে বিজেপি। উত্তর কলকাতায় শোভাযাত্রা এবং গঙ্গা আরতির কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির। কিন্তু কেন এই দিনকে নববর্ষ মনে করা হয়? এর পিছনে রয়েছে বিজেপির প্রেরণাদাতা সংগঠন আরএসএস-এর ভূমিকা। সঙ্ঘ সারা বছরে মোট ছ’টি উৎসব পালন করে। তার মধ্যে অন্যতম এই দিনটি। আরএসএস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাজ্যের সর্বত্র ‘বর্ষ প্রতিপদ’ উৎসব পালন করবে সংগঠন।
এই দিন সম্পর্কে সঙ্ঘের প্রবীণ প্রচারক বিজয় আঢ্য বলেন, ‘‘অনেক কারণে এই দিনটি ভারতীয়দের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের জাতীয় পঞ্জিকা অনুসারে বর্ষপ্রতিপদ ভারতীয় নববর্ষের প্রথমদিন। ভারতীয় কালগণনা প্রকৃতিদেবীর উপর ভিত্তি করেই নিরূপিত হয়েছে। বসন্ত ঋতু প্রাকৃতিক কারণে নবজীবনের বার্তা বয়ে আনে। এই সময় প্রকৃতিও নবরূপ ধারণ করে। তাই এই দিনটি সমগ্র মানবজাতির নতুন বছরের প্রথম দিন। গোটা দেশেই এই সময়টায় নানা নামে নতুন বছরের প্রথম দিন হিসাবে পালিত হয়। এর পিছনে কয়েকটি ঐতিহাসিক কারণও রয়েছে।’’
সেই কারণগুলি সম্পর্কে বিজয় জানান, ব্রহ্মপুরাণ মতে এই দিনেই প্রজাপতি ব্রহ্মা জগৎ সৃষ্টি করেন। তাই পৃথিবীতে কালগণনার প্রথম দিন। কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের শেষে যে যুগাব্দ গণনা শুরু হয়েছিল তা এই দিনটি থেকেই। এ বার শুরু হতে চলেছে ৫১২৫ যুগাব্দ। আবার উজ্জয়িনীর সম্রাট অত্যাচারী শকদের পরাজিত ও বিতাড়িত করে ‘শকারি বিক্রমাদিত্য’ উপাধি গ্রহণ করে ‘বিক্রম সম্বত্’ প্রবর্তন করেন এই দিন থেকেই। এ বার ২০৮০ বিক্রমাব্দের সূচনা হবে।
এখানেই শেষ নয়। চৈত্র মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথিতেই যুধিষ্ঠিরের রাজ্যাভিষেক হয়েছিল। আবার এই দিন থেকেই চৈত্র নবরাত্রির সূচনা হয়। গেরুয়া শিবিরের চোখে এই দিন গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে। এই তিথিতেই সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলীরাম হেডগেওয়ারের জন্ম হয়।