কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ধর্নায় মমতা। — ফাইল ছবি।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে এ বার ধর্নায় বসতে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৯ এবং ৩০ মার্চ আম্বেডকর মূর্তির সামনে তিনি দু’দিনের ধর্না দেবেন। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দাবি আদায়েই ধর্নায় বসতে চলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার ওড়িশা যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ধর্নায় বসব, আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেই বসব। রাস্তার কাজ, আবাসের কাজ, ১০০ দিনের কাজ, গরিব মানুষের ৭ হাজার কোটি টাকা বাকি রয়েছে। কাজ করিয়ে টাকা দেয়নি। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা এবং লাঞ্ছনার প্রতিবাদে তাই আমি ধর্নায় বসব। ২৯ তারিখ বেলা ১২টায় বসব আবার পরের দিন ৩০ তারিখ সন্ধ্যাবেলা শেষ করব। তার পর ব্লকে ব্লকে কর্মসূচি হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, তিনি বাংলার বকেয়া দিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আবেদন করেছেন। পাশাপাশি তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন কলকাতায় এসেছিলেন, তখন তাঁকেও বকেয়া দিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কোনওটাতেই কিছু কাজের কাজ হয়নি। তাই কার্যত বাধ্য হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসতে চলেছেন মমতা।
মঙ্গলবার ওড়িশা সফরে রওনা হন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান ধরার আগে দিল্লিতে ধর্নায় বসার কথা জানান মমতা। দিন তিনেকের ওড়িশা সফরে পুরীর মন্দিরে পুজো দেবেন মমতা। সেখানে বাংলার একটি অতিথিনিবাসের জমিও চিহ্নিত করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তবে এই সফরের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে মমতার বৈঠক। সম্প্রতি কলকাতায় দলীয় কর্মসূচিতে এসে মমতার সঙ্গে দেখা করে কংগ্রেসকে ছাড়া বিরোধী জোটের সলতে পাকিয়ে গিয়েছেন এসপি নেতা অখিলেশ যাদব। পট্টনায়কের সঙ্গে বৈঠকে তা নিয়েই আলোচনা আরও এগিয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অবস্থায় ওড়িশা রওনা হওয়ার আগে ১০০ দিনের কাজের টাকা-সহ একাধিক প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মমতা।
মমতার ধর্নায় বসা নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে ধর্নায় বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা দাবি করছি, একশো দিনের কত টাকার কাজ হয়েছে, কত টাকা বকেয়া আছে তা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক রাজ্য। অন্য দিকে, কেন্দ্র বলছে প্রকল্পের টাকা চুরি হয়েছে। কত টাকা দেওয়া হয়েছে, কত টাকা চুরি হয়েছে তা নিয়েও শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক কেন্দ্র। তা হলে সব নাটকের অবসান হবে। না হলে ফের প্রমাণ হবে, দিদি-মোদীর মধ্যে সাঁটগাট কতটা পোক্ত।’’