— নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির মণ্ডল সভাপতির বাড়িতে ঢুকে তাঁকে এবং দলের এক কার্যকর্তাকে বেধড়ক মারধর করেছে দুষ্কৃতীদের একটি দল। বিজেপির অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা আদতে তৃণমূলেরই ‘গুন্ডাবাহিনী’। ক্যানিংয়ের এই ঘটনায় গুরুতর জখম হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে বিজেপির ওই দুই নেতাকে। এলাকার বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার বিধায়ক সওকত মোল্লা। তাঁর ‘পোষা গুন্ডারাই’ ভোটের আগে এলাকা বিরোধীশূন্য করতে চেয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, ভোটের আগে পায়ের উপর পা তুলে ঝগড়া করছে বিজেপি। সওকতের দাবি, ‘‘তৃণমূল এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নয়। তৃণমূলকে জড়ানোর ঘটনার নিন্দা করছি। ধিক্কার জানাচ্ছি।’’
রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত জীবনতলা থানার মটরদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের শান্তা পাড়ায়। অভিযোগ, সেখানেই প্রায় ২০০ জন তৃণমূল সমর্থিত গুন্ডার অত্যাচারে গুরুতর জখম হয়েছেন বিজেপির কার্যকর্তা এবং মণ্ডল প্রেসিডেন্ট। আজ সকালে বন্দুক, বোমা, রড এবং অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে বিজেপির মণ্ডল প্রেসিডেন্ট সুব্রত দাসকে তার বাড়িতে ঢুকে মারধর করে। এ ছাড়াও আক্রান্ত হন ক্যানিং পূর্ব তিন নম্বর মণ্ডলের মণ্ডল সম্পাদক বিভাস মণ্ডল। বিজেপির অভিযোগ পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হলেও তারা আসে প্রায় দু’ঘণ্টা পর।
এই ঘটনার পর আক্রান্ত সুব্রতকে মোবাইলে একটি ভিডিয়ো করে তাঁর রক্তাক্ত অবস্থার ছবি দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রায় বেহুঁশ হয়ে যাওয়া বিজেপি কার্যকর্তা বিভাসকে একটি টোটোয় চাপিয়ে কোনও মতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যেরও ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে সুব্রতের মাথা ফেটে রক্ত গড়াচ্ছে। রক্ত ঝরছে শরীর বেয়েও। অন্য দিকে বিভাস প্রায় অচেতন। সেখানেই এলাকার পুলিশ এবং জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুব্রত। ভিডিয়োয় ক্যানিংয়ের পরিস্থিতি জানিয়ে তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সাহায্য চেয়েছেন। যদিও বিজেপির এই ভিডিয়োর সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
জয়নগর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল রবিবার বলেন, ‘‘আমি ভোটপ্রচারে ব্যস্ত। গোসাবায় রয়েছি। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে সে ভাবে কিছুই জানি না। ওরা ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। বিধায়ক হিসাবে সওকত যা কাজ করেছে, তা অতুলনীয়। গ্রামীণ একটি বিধানসভার বিধায়ক হয়ে সেখানকার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে পানীয় জল জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুফল ওই এলাকার প্রত্যেকটা মানুষ পেয়েছেন। এমন এক জন বিধায়কের বিরুদ্ধে বিজেপি যে এমন অভিযোগ করবে, তেমনটাই প্রত্যাশিত।’’
প্রতিমা আরও বলেন, ‘‘এই ভোটে কোনও ইস্যু না পেয়ে বিজেপি প্রত্যেকটি জায়গায় পায়ের উপর পা তুলে ঝগড়া করছে। সম্প্রতি আমার লোকসভার অন্তর্গত বাসন্তী বিধানসভায় দুই ভাইয়ের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে মারামারি হলে, তাতেও রাজনৈতিক রং চড়িয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধ অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় বিজেপি প্রার্থী অশোক কাণ্ডারির যুক্ত থাকার কথা জানতে পেরেছি। তাই বিজেপির অভিযোগ কতটা সত্যি তা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।’’