—প্রতীকী চিত্র।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে দু’কোটি সই সংগ্রহের ডাক দিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। কিন্তু সই সংগ্রহ করতে গিয়ে ‘বাস্তব’ বুঝছেন দলের নেতারা। বিপুল সই সংগ্রহ করার জন্য নিচু তলায় যত কর্মী থাকা দরকার, এই মুহূর্তে দলের ভাঁড়ারে তা নেই। তাই পরিকল্পনায় বদল এনে দুর্গা পুজোয় দলীয় বুক স্টল বাড়াতে উদ্যোগী বিজেপি। সেই স্টল থেকেই সাক্ষর সংগ্রহের লক্ষ্য তাদের।
সূত্রের খবর, আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে দল কর্মসূচিতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় এই বছরের সদস্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া থমকে আছে। দলের নেতৃত্ব স্থানীয়েরা প্রাথমিক সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করলেও নিচু তলায় এই কর্মসূচি নিয়ে পৌঁছনোই যায়নি। সেই কথা মাথায় রেখে আগামী ২৩ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বিশেষ সদস্য সংগ্রহ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রতি বুথ থেকে ২০০ এবং প্রতি মণ্ডল থেকে ১০ হাজার সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তার আগে অবশ্যই প্রতিটি মণ্ডলে যাতে একটি করে বুক স্টল করা যায়, সেই বিষয়ে বিশেষ তৎপর হতে বলা হয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব যদি না-ও হয়, অন্তত গত বছরের চেয়ে বুক স্টলের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বেশ কিছু জেলায় গত বছরের তুলনায় এ বার বেশিসংখ্যক বুক স্টলের জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। গত বছর দক্ষিণ কলকাতায় চারটি বুক স্টল হয়েছিল। এই বছর এখনও পর্যন্ত ৭টি বুক স্টলের জন্য পুলিশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলায় গত বছর একটি মাত্র বুক স্টল ছিল। এ বার ৭টি বিধানসভায় অন্তত একটি করে মোট ১০টি বুক স্টল করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়ায় গত বছর ৭টি বুক স্টল হয়েছিল। বিজেপি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ২০টি বুক স্টলের জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ৮ জেলায় এখনও পর্যন্ত ২৫টি বুক স্টলের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। তবে এক জেলা নেতার বক্তব্য, “উত্তরবঙ্গের অনেকগুলো জেলায় বড় কালী পুজো হয়। ফলে, অনেক জায়গায় সেই সময়ে বুক স্টলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” বিজেপির এক রাজ্য নেতার কথায়, “এই পার্থক্যটা স্বাভাবিক। গত বছর দলের লক্ষ্য ছিল পুজোর সঙ্গে যুক্ত হওয়া। তাই পুজো উদ্বোধনের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এ বার দল বলে দিয়েছে বুক স্টল করতে। ফলে, উদ্বোধনের সংখ্যা অনেক কম। তুলনায় বেড়েছে বুক স্টলের সংখ্যা।”
এই বুক স্টলেই থাকবে গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহের ব্যবস্থা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সই সংগ্রহ করতে গিয়ে যে ভাবে কাল ঘাম ছুটেছে, সেই খামতি ঢাকতে বুক স্টলের উপরেই ভরসা রাখছে বিজেপি। দলের এক রাজ্য নেতার মতে, “এ চিকিৎসকেরা অনশন করতে চাইলেও এই সরকার চৌকি কেড়ে নেয়, মঞ্চ খুলে দেয়! তাই মাথায় রাখতেই হবে, শাসক দলের আক্রমণ আসতে পারে, প্রশাসন অসহযোগিতা করতে পারে। তবে আমরা বাধা পেরিয়েই স্টল করব।”