এ বার শুভেন্দুর সভার পাল্টা সভা করে তাঁকে জবাব দিতে চায় তৃণমূল। — ফাইল চিত্র।
রবিবার বীরভূমের মুরারইয়ে জনসভা করে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ বার সেই সভার পাল্টা সভা করে তাঁকে জবাব দিতে চায় তৃণমূল। তাই সোমবার বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যেরা বৈঠক করে মঙ্গলবার মুরারইয়েই পাল্টা জনসভা করে জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুভেন্দুর আক্রমণের জবাব প্রতি আক্রমণে দেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই তড়িঘড়ি এই পাল্টা সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে সংগঠনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূলের ন’জন নেতাকে নিয়ে কোর কমিটি গড়ে রাজ্যের আরও তিন নেতাকে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন চক্রবর্তীকে দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা।
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নায় বিজেপির এক জনসভায় নাম ধরে ধরে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনেছেন শুভেন্দু। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছে তমলুক তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা কমিটি। আর রবিবার মুরারইয়ে শুভেন্দু সভা করতেই পাল্টা জনসভা করার পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল। মনে করা হচ্ছে, এ বার থেকে শুভেন্দুকে আর খোলা ময়দান ছেড়ে দিতে নারাজ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই নন্দীগ্রামের বিধায়কের একতরফা অভিযোগের পাল্টা জবাব দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলার শাসকদল।
বীরভূম জেলা তৃণমূল মুখপাত্র তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘কোর কমিটি বৈঠক করেই পাল্টা জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিরোধী দলনেতা যে সব অভিযোগ করেছেন, জনসভা থেকেই নেতারা সেই সব অভিযোগের জবাব দেবেন।’’ রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বীরভূম জেলায় অনুব্রতের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতৃত্ব বীরভূমে দলের প্রভাব বৃদ্ধি করতে চাইছে। আগামী পঞ্চায়েত তো বটেই, আগামী লোকসভা নির্বাচনেও বীরভূম জেলায় ভাল ফল করতে চাইছে তারা। তাই বীরভূম জেলায় এসে বার বার জনসভা করে বিজেপির পক্ষে মাটি তৈরির চেষ্টা করছেন শুভেন্দু।
কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব তেমনটা হতে দিতে নারাজ। তাই বিরোধী দলনেতা জনসভা করে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জবাব দিতে ময়দানে নামছে তৃণমূল। ২০১৩ সাল থেকে বীরভূমের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে শাসকদল তৃণমূলের রমরমা। আর ২০১৪ সাল থেকে ওই জেলার দু’টি লোকসভা আসন তাঁদের দখলে। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে যাতে বিজেপি কোনও দাঁত না ফোটাতে পারে, তাই আগে থেকেই বিজেপিকে রুখতে ময়দানে নামছেন শাসকদলের বীরভূমের নেতারা।