হলং বনবাংলোয় অগ্নিকাণ্ড। ছবি: সংগৃহীত।
ডুয়ার্সের হলং বনবাংলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গড়লেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। ওই কমিটিতে থাকবেন মুখ্য বনপাল, বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) এবং ওই বাংলো এলাকার রেঞ্জার-সহ বেশ কয়েক জন। ঐতিহ্যবাহী এই বাংলোর পুড়ে যাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই রহস্য দানা বেঁধেছে বিভিন্ন মহলে। সত্যিই কি দুর্ঘটনা, না কি অন্তর্ঘাত, উঠছে সেই প্রশ্ন।
জলদাপাড়ার গভীর জঙ্গলের এই বাংলোটি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জ্যোতি বসু বছরে অন্তত এক বার এই বনবাংলোয় যেতেন। বন দফতর সূত্রে খবর, বর্ষার সময় ১৫ জুন থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ থাকে হলং বাংলো। কাজেই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অগ্নিকাণ্ডের সময় কোনও পর্যটক সেখানে ছিলেন না। বাংলোটি সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কর্মীরা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ফালাকাটা ও হাসিমারা থেকে দমকলও এসেছিল। কিন্তু লাভ হয়নি। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বাংলোটি।
২০১০ সালে ডুয়ার্সেরই জয়ন্তী বাংলো আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। পরে সেখানে বিলাসবহুল বাংলো তৈরি হয়। হলংয়ের ঘটনায় অনেকেই অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসাবে শর্ট সার্কিটের কথা বলেছেন। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও পরভীন কাসোয়ান মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। বন দফতরের একাংশের অনুমান, কোনও ভাবে এসিতে আগুন ধরে গিয়েছিল। এসিতে যে গ্যাস থাকে, তা থেকে বিস্ফোরণ হয়েছিল। তার শব্দও শোনা গিয়েছিল।
এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, একে বর্ষা, তার পর বাংলো পর্যটকহীন। ফলে এসি বা গিজ়ার তো চলার কথা নয়। তা হলে শর্ট সার্কিট হল কী করে? কেউ কেউ অন্তর্ঘাতের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, যে সময় আগুন লাগার ঘটনাটি ঘটে, সেই সময় লোডশেডিং ছিল। যদি তা-ই হয়, তা হলে কী ভাবে শর্টসার্কিট হল ? এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’