রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে অখিল গিরিকে মন্ত্রিত্বের পদ থেকে সরানোর দাবি তুলেছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা পদ থেকে অপসারণের দাবিতে সরব হল তৃণমূল। আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন শুভেন্দু, এই অভিযোগ তুলে তাঁকে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরানোর দাবি তুললেন রাজ্যের বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এবং খাদ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি।
সোমবার বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই অখিলের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাবও জমা দেয় বিজেপির পরিষদীয় দল। তবে বিষয়টি বিচারাধীন বলে কারা প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) অখিলের অপসারণের দাবিতে আনা মুলতুবি প্রস্তাব বাতিল করে দেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভার কক্ষে চিৎকার করে স্লোগান দিতে শুরু করেন। পরে তাঁরা ওয়াকআউটও করেন।
এর পরেই শুভেন্দুকে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরানোর দাবিতে সরব হন বিরবাহা এবং জ্যোৎস্না। তাঁদের বক্তব্য, এক জন আদিবাসী মহিলা সম্পর্কে শুভেন্দু যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ওই সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। তাঁকেও বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরানো হোক। পাশাপাশিই, তৃণমূলের পরিষদীয় দলের কাছে বিরোধী দলনেতার ‘কুমন্তব্য’-এর বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।
যদিও শুভেন্দুর বক্তব্য, তিনি কারও নাম করে কিছু বলেননি। বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘‘আমি তো ওঁকে (বিরবাহা) কিছু বলিনি। উনি কেন গায়ে মাখছেন?’’ শুভেন্দুর সংযোজন, ‘‘বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করে আমাকে বিরোধী দলনেতা করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিধানসভায় সরব হয়ে আমাকে সরানো যাবে না।’’
রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে মন্ত্রী অখিলের মন্তব্যে গোটা রাজ্যেই শোরগোল পড়েছে। যার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বিরবাহা সম্পর্কে শুভেন্দুর একটি বিতর্কিত মন্তব্য নিয়েও সরব হন মমতা। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও ওই ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ওই ভিডিয়োতে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এখানে যারা বসে আছে, এই যে দেবনাথ হাঁসদা ও বিরবাহা হাঁসদা, এরা শিশু। এগুলো আমার জুতোর তলায় থাকে।’’ এ নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি সরগরম হতেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আদিবাসী নিপীড়ণ প্রতিরোধ আইনে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বিরবাহা। এ বার শুভেন্দুর অপসারণের দাবিতে সরব হল শাসকদল।