মঙ্গলবার থেকে কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে হচ্ছে এই সম্মেলনের আসর। সম্ভবত এই রাজ্য সম্মেলনেই শেষবার প্রতিনিধিত্ব করার কথা সিপিএমের বেশ কিছু বর্ষীয়ান নেতার। সেই তালিকায় এমন নেতারা রয়েছেন, যাঁরা গত ছয় কিংবা পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সিপিএমের শাখাপ্রশাখা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন।
(বাঁ-দিক থেকে) বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব এবং অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন। তিনদিন ধরে কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে হবে সম্মেলনের কর্মসূচি। সম্ভবত এই রাজ্য সম্মেলনেই শেষবার ‘সক্রিয়’ প্রতিনিধিত্ব করবেন সিপিএমের বেশ কিছু বর্ষীয়ান নেতা। সেই তালিকায় এমন নেতারা রয়েছেন, যাঁরা গত ছয় বা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে সিপিএমের শাখাপ্রশাখা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন।
ওই নেতারা হলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব, অশোক ভট্টাচার্য ও মৃদুল দে। নতুনদের জায়গা করে দিতে নিয়মানুযায়ী সত্তরোর্ধ্ব নেতারা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। সিদ্ধান্তে কোনও বড়সড় বদল না হলে এই বর্ষীয়ান নেতারা এ বার হতে পারেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের ‘মার্গদর্শক’।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পলিটব্যুরো থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন অনেক আগেই। পার্টির সদস্যপদ রেখে দিয়েছেন মাত্র। এ বার তাঁর দেখানো পথেই হাঁটতে পারেন সিপিএমে তাঁর সতীর্থরা। আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, এ বারের রাজ্য সম্মেলন শেষ হলেই বিমান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। নতুনদের জায়গা করে দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি।
সিপিএমের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্য কমিটিতে সত্তরোর্ধ্ব কেউ সম্পাদকমণ্ডলীতে থাকবেন না। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজ্য সম্মেলনে নতুন রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হলে তাঁর হাতেই দায়িত্ব দিয়ে সম্পাদকমন্ডলী থেকে বিদায় নেবেন সূর্যকান্ত। বয়সজনিত কারণেই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে থাকবেন না রবীন-মৃদুল-অশোকরাও। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমকে ক্ষমতায় আনতে যেমন বিমান-সূর্যকান্তদের ভূমিকা ছিল, তেমনই ৩৪ বছরের কিছু বেশি সময় ধরে ক্ষমতা ধরে রাখতে অশোক-রবীন-মৃদুলদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ বার সেই নেতারাই পার্টির নিয়ম মেনে বিদায় নিতে পারেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে। বদলে সেই জায়গায় আসতে পারে বেশকিছু নতুন মুখ। দলীয় সূত্রের দাবি, বাংলার রাজনীতিতে ‘নতুন দিশা’ দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম।
শুধু তা-ই নয়, এপ্রিল মাসে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসের পর পশ্চিমবঙ্গ থেকে পলিটব্যুরোর সদস্যপদ ছাড়তে পারেন বিমান এবং বর্ষীয়ান কৃষকনেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ হান্নান মোল্লা। পলিটব্যুরোতে থাকার সর্বোচ্চ বয়স নির্ধারিত করা হয়েছে ৭৫ বছর। এই দুই নেতারই বয়স ৭৫ পেরিয়ে গিয়েছে। তাই তাঁদের আর পলিটব্যুরোতে থাকা সম্ভব না-ও হতে পারে। তবে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর না থাকলেও পলিটব্যুরো থেকে যেতে পারেন সূর্যকান্ত। কারণ, এখনও তিনি ৭৫-এ পৌঁছননি।