‘ছাইচাপা আগুন’ নিভলে ভোট: বিনয়

বছর ঘুরতে চলল, বিমল গুরুং পাহাড়ে নেই। পাহাড়ও এখন দৃশ্যত শান্ত। কিন্তু গুরুং নিজে না থাকলেও তাঁর সঙ্গীরা এখনও পাহাড়েই রয়েছেন এবং সেই সঙ্গীদের মাধ্যমেই পাহাড়ে গুরুং ‘সক্রিয়’ রয়েছেন বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করলেন জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক প্রধান বিনয় তামাং।

Advertisement

দেবাশিস চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০৪:৩৭
Share:

বছর ঘুরতে চলল, বিমল গুরুং পাহাড়ে নেই। পাহাড়ও এখন দৃশ্যত শান্ত। কিন্তু গুরুং নিজে না থাকলেও তাঁর সঙ্গীরা এখনও পাহাড়েই রয়েছেন এবং সেই সঙ্গীদের মাধ্যমেই পাহাড়ে গুরুং ‘সক্রিয়’ রয়েছেন বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করলেন জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক প্রধান বিনয় তামাং। সেটাই এখন জিটিএ-র কাছে কার্যত ‘ছাইচাপা আগুন’।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার কালিম্পঙে ১৫টি বোর্ডের অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘‘এখন তো ভোট হওয়ার পরিস্থিতি নয়।’’ কেন ভোট করার পরিস্থিতি এখন নেই, তা স্পষ্ট করে বৃহস্পতিবার বিনয় বললেন, ‘‘যিনি দার্জিলিঙে নেই, তাঁর কার্যকলাপের উপরে নজর রাখার চেষ্টা চলছে। কারণ, তাঁরা নেই, কিন্তু সঙ্গীরা তো আছেন। দু’পক্ষের মধ্যে যোগাযোগও আছে।’’ জিটিএ-র ভোট হলে গুরুংবাহিনী পাহাড়ে গোলমাল করতে পারে বলে সরাসরি আশঙ্কা প্রকাশ করে বিনয়ের আরও বক্তব্য, ‘‘আগুন নিভে গিয়েছে। কিন্তু নীচে যে ছাইচাপা আগুন এখনও রয়েছে, সেটা না নিভলে ভোট করানো সম্ভব নয়।’’

গুরুং দার্জিলিং পাহাড় ছেড়েছেন গত বছর জুনে, গোলমাল শুরু হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই। তার পরে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন ও টানা ১০৪ দিনের বন্‌ধ পার হয়ে শান্তি আসে পাহাড়ে। বিনয়, অনীত থাপাকে সামনে রেখে জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক বোর্ড গঠিত হয় গত সেপ্টেম্বরে। ছ’মাস পরে তার মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন, আর কত দিন ধরে এ ভাবে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ চালাবেন বিনয়রা?

Advertisement

বিনয়েরা ভোটে জিতে আসতে চান। তাঁর দাবি, এখন ভোট হলে তাঁরাই সম্ভবত সব ক’টি আসনে জিতবেন। কিন্তু ভোটের সময়ে কোনও গোলমাল হলে তাঁদের এবং প্রশাসনকেই দায়ী থাকতে হবে। তা হলে আরও একটু অপেক্ষা করে আগুন পুরো নিভিয়ে নিলে ক্ষতি কি?

সেই অপেক্ষাটা কত দিনের? কারণ, গুরুংয়ের প্রভাব যে মোছেনি, পাহাড়ের অনেকেই তা স্বীকার করেন। ট্যাক্সিচালক থেকে প্রাক্তন সরকারি কর্মী সবাই বলছেন, বিনয়রা যা-ই দাবি করুন, এখনও বহু জায়গায় গুরুঙের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে। গুরুঙের ডাকে সেই সহানুভূতি উস্কে দেওয়ার জন্য আছেন শুভা প্রধানের মতো লোকেরাও। তাই আপাতত ভোটে যেতে চাইছে না প্রশাসন। বিনয় বলছেন, সেপ্টেম্বরে বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেই পুজো। তার পরে স্কুলগুলির পরীক্ষা। তাই আপাতত এখন কিছু ভাবাই হচ্ছে না।

তবে কি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দিষ্ট করে দেওয়া চার দফা কর্মসূচি, তাঁরই বেঁধে দেওয়া দু’বছর সময়সীমার মধ্যে শেষ করার পরে এই ভোটের কথা ভাবা হবে? জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন বিনয়। কিন্তু হরকাবাহাদুর ছেত্রীর মতো পাহাড়ের বিরোধী নেতারা বলছেন, ‘‘সেটাই তো যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে। দু’বছর পরে লোকসভা ভোট হয়ে যাবে, বিধানসভা ভোটেরও অনেক বাকি থাকবে। তাই মেয়াদ বেঁধে দেওয়ার ক্ষেত্রে আর তো কোনও যুক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’

পাহাড়ের প্রশ্ন, ‘ছাইচাপা আগুন’ ততদিনে পুরো নিভবে তো?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement