Rail Accident

Bikaner Express derailed: কুয়াশার চাদর ভেদ করে মানুষের কোলাহল, ক্রেনের ধাতব গর্জন, ছন্দে ফিরছে দোমহনি

৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও ময়নাগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি ৪৩ জন।

Advertisement

পার্থপ্রতিম দাস ও রকি চৌধুরী

ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ১২:৫২
Share:

দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলের ইঞ্জিন দেখছেন রেলমন্ত্রী। — নিজস্ব চিত্র।

ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার আতঙ্ক বুকে নিয়ে দিন শুরু করেছে দোমহনি। কুয়াশার চাদর ভেদ করে মানুষের কোলাহল। বিপুল ক্রেনের ধাতব গর্জন। চুম্বকে এটাই ময়নাগুড়ির দোমহনির খণ্ডচিত্র। যেখানে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় গুয়াহাটিগামী বিকানের এক্সপ্রেসের একাধিক কামরা লাইনচ্যুত হয়েছিল। দুর্ঘটনার পর ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে ছন্দে ফিরতে মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে দোমহনি।

যাত্রীদের উদ্ধার করার কাজ শেষ হয় রাত ৩টে নাগাদ। তার পর পুরোদমে আরম্ভ হয় লাইনচ্যুত কামরা ও ভেঙে চুরমার রেললাইন মেরামতি ও সরানোর কাজ। ঘড়িতে বেলা ১২টা। তখনও চলছে লোহার জট পাকানো লাইন সরিয়ে নতুন লাইন পাতার কাজ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরা সরানোর কাজও চলছে একইসঙ্গে। উদ্ধারে হাতে হাত লাগিয়ে কাজ করছে ‘জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)’, সিভিল ডিফেন্স এবং রেলের নিজস্ব বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীরা। ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যাধুনিক ক্রেন।

Advertisement

রাত থেকেই উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয়েরাও। এত ক্ষণের চেষ্টায় দু’টি দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। এখনও লাইনের উপর একেবেঁকে পড়ে আরও অন্তত ১০টি কামরা। তবে কোনও কামরাতেই আরও কোনও যাত্রী আটকে নেই।

শুক্রবার সকালে দোমহনির ছবি।

কিছুক্ষণ আগেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে গিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তাঁর ইঙ্গিত যান্ত্রিক ত্রুটির দিকে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত।

Advertisement

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও ময়নাগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪৩ জন। শতাধিক মানুষ অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন। তাঁরা প্রায় সবাই বাড়ির পথে রওনা হয়ে গিয়েছেন।

আহতদের দেখতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী। সেখানে আহতদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি চিকিৎসা সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।

হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে কথা বলছেন রেলমন্ত্রী।

গভীর রাতে বিকানের এক্সপ্রেসের যাত্রীদের উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পর বিশেষ ট্রেনে করে গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করে রেল। যে সমস্ত যাত্রীদের বাড়ি বাংলার আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে, তাঁদের জন্য উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি)-এর বাস পাঠায়। সেই বাসে তাঁদের বাড়ি ফেরানো হয়। তবে কয়েকজন যাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ময়নাগুড়ি শহরের বিএড কলেজ ও একটি ধর্মশালায়। আপাতত সেখানেই তাঁরা থাকবেন। একটু সুস্থ হলে তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।

এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘কাল বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা পাওয়ার পরেই অন্তত ২০টি বাস নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিই। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও মালবাজার ডিপোর সমস্ত বাস স্ট্যান্ডবাই রাখা ছিল। দোমহনির দুর্ঘটনাস্থল ছাড়াও ময়নাগুড়ি বিএড কলেজ ও ধর্মশালার সামনে বাসগুলো রাখা ছিল। আজও একই ভাবে পরিষেবা দিচ্ছি। তিন জন আধিকারিক ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে গোটা ব্যাপারটা দেখভাল করছেন। অন্তত ৩৫টি বাসে আড়াইশো থেকে তিনশো যাত্রীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বাড়িতে কিংবা নিকটবর্তী স্টেশনে পৌঁছে দিয়েছে এনবিএসটিসি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement