বিমল গুরুং, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিনয় তামাং। ফাইল চিত্র।
তা হলে সত্যিই কি ‘মেলাবেন তিনি মেলাবেন’? মঙ্গলবার দুপুরে নবান্নে পাহাড়-বৈঠক শুরুর আগে এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে প্রশাসনের অন্দরে।
এই কাজ যে কঠিন হতে পারে, সেই সম্ভাবনাকে উস্কে সোমবার বাগডোগরা থেকেই বিমল গুরুংকে কড়া বার্তা দিলেন বিনয় তামাং। বললেন, ‘‘পাহাড়ের রাজনীতিতে আর বিমলের জায়গা নেই। তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক মঞ্চ ভাগাভাগিরও প্রশ্ন নেই।’’ বিনয়ের এই বার্তাকে বৈঠকের আগে দর কষাকষির ক্ষেত্র তৈরি করার প্রচেষ্টা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের কথায়, যে বিমল তিন বছর আগে বিনয়দের ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে কোনওরকম ক্ষমতা ভাগ করা বিনয়কের পক্ষে যেমন কঠিন, তেমনই মুখে না বললেও পাহাড়ে বিমলের প্রভাবকে পুরোপুরি অস্বীকার করাও সম্ভব নয়। আজ, মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠকে এই দুই পক্ষকে বুঝিয়ে কী ভাবে মেলাবেন শাসক শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব, সেটাই এখন দেখতে আগ্রহী সকলে।
বিনয়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে বলা হয়েছে, তিন বছর আগের সেপ্টেম্বরে যখন পাহাড়কে ঠান্ডা করতে বিনয় তামাং এবং অনীত থাপা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন, তখন এই বিমলই তাঁদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। আজ সে কথা ভুলে গেলে চলবে কী করে? পাহাড়ের জনজীবনকে স্বাভাবিক করেছেন বিনয়রাই, তখন বিমল কোথায় ছিলেন— প্রশ্ন বিনয়পন্থীদের। বিনয় নিজেও এ দিন বলেন, ‘‘দার্জিলিং পাহাড়ের জন্য বিমল গুরুং এখন অপ্রসাঙ্গিক। উনি এখন দেড়শোটিরও বেশি মামলায় অভিযুক্ত পলাতক নেতা। দেশের আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। পাহাড়ের রাজনীতিতে বিমলের আর জায়গা নেই।’’
আরও পড়ুন: দল করতেন না ফাঁসে মৃত, মানলেন দিলীপ
বিমল গুরুংয়ের সমর্থকদের বক্তব্য, বহু মামলা বিনয়দের বিরুদ্ধেও আছে। তাঁরা ছোট ছোট বৈঠক, মিছিল জারি রেখেছেন। এ দিনও দার্জিলিঙের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁদের একটি মিছিল হয়। বিমলপন্থীদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগেও আমরা ছোট ছোট ক্যাম্প অফিস করে জনসংযোগ চালিয়ে গিয়েছিলাম।’’ রাজনৈতিক সূত্রের খবর, রবিবার তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন বিমল। প্রশান্ত কিশোরের দলের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। তবে পাহাড়ের একটি সূত্রের দাবি, বিমল বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে আপাতত পৃথক রাজ্যের দাবি শিকেয় তুলে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলানোয় তাঁর বহু অনুগামী হতাশ। তাঁদের কেউ কেউ জিএনএলএফ বা বিনয় তামাংদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলেও সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ট্রেন চলবে ১০-১৫%, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লোকাল চায় রেল