ছবি: সংগৃহীত।
করোনার মতিগতি দেখে যদি ১৪ এপ্রিলের পরেও লকডাউন চালাতে হয়, সে-ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী কয়েকটি বিষয়ে ছাড় দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার করোনা-পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফুল ও পান চাষি এবং বিড়ি শ্রমিকদের গতিবিধিতে কিছু ছাড় দিয়েছে তারা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, নির্ধারিত নিয়মবিধি মেনেই কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের। নইলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ-প্রশাসন।
তালাবন্দিদশার শুরু থেকেই অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। এই বিষয়ে সুসংহত পদক্ষেপ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান বিরোধী নেতারা। অতি দরিদ্র অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য এককালীন অর্থসাহায্যের কথাও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘অসংগঠিত ক্ষেত্রে বিড়ি শ্রমিকেরা বাড়িতে বসেই কাজ করেন। কোনও পরিবারে চার, কোনও পরিবারে আট জন বিড়ি বাঁধেন। যখন সময় ভাল ছিল, তখন ৫০ জন একসঙ্গে বিড়ি বেঁধেছেন। কিন্তু এখন সেটার অনুমতি দিতে পারব না। বিধি মেনে দু’তিন জন বাড়িতে বসে বিড়ি বাঁধলে, দূরত্ব বজায় রেখে সর্বাধিক সাত জন এই কাজ করলে এবং সেই বিড়ি কেউ যদি বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে বিড়ি শিল্পে বিলি করেন, সেটায় ছাড় থাকবে। অনেক অনুরোধ রয়েছে। লকডাউনের ব্যাপারটা দেখে নিয়ে বাকিগুলির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সব কৃষিপণ্যেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। কৃষি বাজারে অবাধ পণ্য চলাচল নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনকে। দুধচাষিদের দুধ নষ্ট হচ্ছিল বলে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বার ফুল, পান চাষিদেরও কাজকর্মে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করল সরকার। মমতা বলেন, ‘‘হাওড়া, হুগলি, সুন্দরবন, মেদিনীপুরের বহু ফুলচাষি বাজারে ফুল আনতে পারছেন না। এ বার তাঁরা গাড়িতে ফুল আনতে পারবেন ওই সব বাজারে। কলকাতার ফুলবাজারগুলি খুলে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ভাবেও ফুল বিক্রি করা যাবে। চাষিদের পান নষ্ট হওয়ার কোনও কারণ নেই। আনাজপাতি নষ্টেরও ব্যাপার নেই।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে করোনার সংক্রমণ এখনও তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছয়নি। এ-পর্যন্ত আক্রান্ত ৬৯ জন। ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন ন’টি পরিবার থেকে। নতুন আক্রান্ত আট জনের চারটি ঘটনাই পুরোপুরি পারিবারিক। তাঁর কথায়, ‘‘তৃতীয় ফেজ়ে পৌঁছয়নি, তাতেই এই অবস্থা। লক্ষ লক্ষ হলে কী হবে!’’