পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য এবং বিভাস অধিকারী। নিজস্ব ছবি।
সংবাদমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে যে ভাবে ‘কাঁটাছেড়া’ চলছে, তাতে বেজায় ‘বিরক্ত’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে আসা নয়া ‘চরিত্র’ বিভাস অধিকারী। গত কয়েক দিন ধরেই তাঁর নাম নিয়ে আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। সেই আলোচনায় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে নিজেকে ‘কেউটের বাচ্চা’ বলে সম্বোধন করলেন তিনি। হুঁশিয়ারির সুরে বললেন, ‘‘কাউকে খুন করতে পাঁচ লাখ লোকের দরকার পড়ে না। এক জনই কাফি (যথেষ্ট)।’’ মুখ খুললেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেই ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়েও।
বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজ সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি বিভাসকে মঙ্গলবারই কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে বুধবার বিভাস জানান, ভবিষ্যতেও তিনি ইডি-সিবিআইকে তদন্তে সাহায্য করবেন। দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সুখ্যাতি করে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, স্বচ্ছ তদন্তই হচ্ছে। ওরা আইন মেনেই তদন্ত করছে।’’
২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বেসরকারি বিএড ও ডিএলএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি পদে থাকা বিভাসের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের ‘সম্পর্ক’ এবং মানিকের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে চর্চা চলছে। তার প্রেক্ষিতে বিভাস বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমার আশ্রমের উদ্বোধনে এসেছিলেন। তাই অনেকে ভাবছিলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমার কাছে মানুষ। আর কলেজ চালাতে গিয়ে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে আমার অবশ্যই সম্পর্ক ছিল।’’
এর পরেই সংবাদমাধ্যম নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন বিভাস। বলেন, ‘‘কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম আমার পিছনে আদাজল খেয়ে লেগে পড়েছে আমার ক্ষতি করবে বলে। কিন্তু আমার লক্ষ লক্ষ ভক্ত আসেন এই আশ্রমে। আমিও চাইলে পাঁচ লাখ লোক যখন তখন জোগাড় করতে পারি। আমিও কেউটের বাচ্চা। প্রয়োজনে এই লোক নিয়ে গিয়ে ব্রিগেড ভরাট করতে পারি।’’
ইডি সূত্রে খবর, সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে জেরা করে বিভাসের নাম উঠে এসেছে। কুন্তল সংবাদমাধ্যমেও দাবি করেন, বিভাসও নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত। সেই সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন বীরভূমের নলহাটি-২ ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিভাস।