কলকাতা হাইকোর্ট।
ভাটপাড়া পুরবোর্ডের দখলকে কেন্দ্র করে সিঙ্গল বেঞ্চের পর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও হোঁচট খেল তৃণমূল। তৃণমূল তড়িঘড়ি শুনানির যে দাবি জানিয়েছিল, আজ, শুক্রবার বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ তা খারিজ করে দিল।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আজ শুনানি হবে না। এটা এমন কোনও গুরুতর বিষয় নয়, যার শুনানি এত দ্রুততার সঙ্গে করতে হবে। শুক্রবারের বদলে সোমবার শুনানি হলে ‘মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না’, তাই সোমবারই এই মামলার শুনানি হবে, জানান তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে ও পরে এ রাজ্যের যতগুলি পুরবোর্ড রং বদল করে বিজেপিতে শামিল হয়েছিল, তার মধ্যে ভাটপাড়া অন্যতম। লোকসভায় বিজেপি এ রাজ্যে চমকে দেওয়া ফলাফল করেছিল ঠিকই, কিন্তু তার কয়েক মাস পর থেকেই ফের ঘর গুছিয়ে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। বিজেপির দিকে চলে যাওয়া পুরবোর্ডগুলি তৃণমূল পুনর্দখল করেছে একে একে। বাদ রয়েছে শুধু ভাটপাড়া।
আরও পড়ুন: ভাটপাড়ায় নাটক, সকালে দখল তৃণমূলের, বিকেলে খারিজ হাইকোর্টে
অর্জুন সিংহের গড় হিসাবে পরিচিত ভাটপাড়া এত দিন তৃণমূলের দখলেই ছিল। কিন্তু বিধায়ক অর্জুন সিংহ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর, তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের অনেক বিধায়কও গেরুয়া শিবিরে সামিল হন। অর্জুন সিংহ লোকসভার সাংসদ হওয়ার পর তাঁর ছেড়ে যাওয়া বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জেতেন অর্জুন পুত্র পবন সিংহ। পুরসভার চেয়ারম্যান পদে অর্জুন বসান ভাইপো সৌরভ সিংহকে।
আরও পড়ুন: শনিবার পর্যন্ত বৃষ্টি, জাঁকিয়ে শীত তার পর
এই সৌরভ সিংহের বিরুদ্ধেই বৃহস্পতিবার অনাস্থা এনেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের বহু দিন থেকেই দাবি ছিল এই পুরসভায় বিজেপি সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারিয়েছে, তাই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হোক। ৩৫ আসনের পুরসভায় তৃণমূলের দিকে ২২ জন রয়েছেন বলেও দাবি করে তৃণমূল। ৩০ ডিসেম্বর ভাটপাড়ার তিন তৃণমূল কাউন্সিলর অনাস্থার নোটিস দেন। তার ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ভোটাভুটি হয়। তাতে তৃণমূলের ১৯ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। বিজেপি আগেই এই ভোটাভুটির বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তাই ভোটাভুটিতে বিজেপির কোনও কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন না।
আরও পড়ুন:মার্কিন ড্রোন হানায় নিহত ইরানি কম্যান্ডার জেনারেল সোলেমানি-সহ ৬
সেই মতো তৃণমূলকেই জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্ত বৃহস্পতিবার বিকেলে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এই ভোটাভুটিকে খারিজ করে দেয়। সবটাই পুর আইন মেনে হবে বলে জানিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ।
সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের নথিপত্র এখনও হাতে পায়নি তৃণমূল। তার আগেই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আজ, শুক্রবার মামলার দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করেছিল তারা। এ দিন ডিভিশন বেঞ্চও দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করে দিল।