বিজেপির সহ-সভাপতি হলেন মাফুজা খাতুন (বাঁ দিকে) ও ভারতী ঘোষ। —ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোটের পর সাংগঠনিক রদবদল করল রাজ্য বিজেপি। দলের সহ-সভাপতি হলেন লোকসভা ভোটে ভাল লড়াই করেও হেরে যাওয়া ঘাটালের প্রার্থী ভারতী ঘোষ। যুগ্ম ভাবে একই পদে আনা হয়েছে জঙ্গিপুরের দলীয় প্রার্থী মাফুজা খাতুন। মঙ্গলবার এই ঘোষণা করেছন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ ছাড়া রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন দলের উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক রথীন বসু। দায়িত্ব বাড়ল সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়দেরও।
লোকসভা ভোটের মুখেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ। দলের টিকিট পেয়েছিলেন ঘাটাল থেকে। তার পর থেকেই কার্যত মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন ঘাটালে। হেরে গেলেও প্রচার পর্ব থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন ভারতী। তিনি পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৯ হাজার ৯৮৬ ভোট। দেবের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৫৯। শেষ পর্যন্ত এক লক্ষের কিছু বেশি ভোটে হেরেছিলেন বটে, কিন্তু তৃণমূলের দুর্গে এই লড়াই নজর কাড়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের।
কেরিয়ার গ্রাফ প্রায় একই রকম মাফুজা খাতুনেরও। দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা, সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক মাফুজা প্রার্থী হয়েছিলেন জঙ্গিপুর কেন্দ্র থেকে। ওই কেন্দ্রে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন খলিলুর রহমান। কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ। মাফুজা শুধু ৩ লক্ষ ১৭ হাজার ভোট পেয়েছিলেন তাই নয়, বিদায়ী সাংসদ অভিজিৎকে পিছনে ফেলে উঠে এসেছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। হেরে গেলেও তাঁর এই লড়াই বিজেপিতে এতটাই সাড়া পড়ে যে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ফোন করে তাঁকে অভিনন্দন জানানো হয়।
রাজনৈতিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ, লোকসভা ভোটের এই লড়াইয়েরই ‘পুরস্কার’ পেলেন দুই নেত্রী— ভারতী এবং মাফুজা। ভারতীর এত দিন দলে কোনও পদ ছিল না। শুধু সদস্য ছিলেন। মাফুজা ছিলেন দলের সংখ্যালঘু মোর্চার সহ-সভাপতি। দু’জনই পেলেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতির পদ।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় পর্ন দেখা সেই নেতাই এখন কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী, দলেই প্রশ্নের মুখে ইয়েদুরাপ্পা
আরও পড়ুন: ফিরোজ শাহ কোটলার নাম বদলে হচ্ছে অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম
দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের তালিকায় যুক্ত হল রথীন বসুর নাম। তিনি ছিলেন দলের উত্তরবঙ্গ জোনের পর্যবেক্ষক। এ ছাড়া দায়িত্ব বেড়েছে রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা বসিরহাট কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়া সায়ন্তন বসুর। তাঁকে দলের ‘জনসম্পর্ক’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সায়ন্তনের সঙ্গে একই দায়িত্বে এসেছেন অমিতাভ মৈত্র। তিনি উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির পর্যবেক্ষক ছিলেন।
বিজেপির জনজাগরণ-এর অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের আর এক সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকারকেও জনজাগরণ-এর অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।