State News

জমি রক্ষা কমিটির হিসাব উল্টে পোলেরহাটগ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড সেই আরাবুলের দখলে

মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত জমি রক্ষা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রশাসনিক কর্তারা। এ দিন সকাল থেকেই পোলেরহাটে বোর্ড গঠন নিয়ে টানটান উত্তেজনা ছিল এলাকায়। গোলমালের আশঙ্কায় জারি হয় ১৪৪ ধারাও। লাগানো হয় সিসি ক্যামেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ১৭:১৪
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

হিসাব উল্টে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পোলেরহাট ২ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে ‘বাজিমাত’ করলেন আরাবুল ইসলাম। জমি রক্ষা কমিটি‘শর্ত’ দিয়েছিল, তাদের পছন্দের প্রার্থীকে পঞ্চায়েত প্রধান করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকিমুল উপপ্রধান হলে আপত্তি করা হবে না। সেই ‘শর্ত’ মেনেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সব হিসাব উল্টে দিয়ে বুধবার আরাবুল ইসলামের অনুগামীই প্রধান নির্বাচিত হলেন। হাকিমুল ইসলাম উপপ্রধান। গোটা ঘটনার নেপথ্যে আরাবুল ইসলামের হাত দেখছেন জমি কমিটির সদস্যরা।

Advertisement

মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত জমি রক্ষা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রশাসনিক কর্তারা। এ দিন সকাল থেকেই পোলেরহাটে বোর্ড গঠন নিয়ে টানটান উত্তেজনা ছিল এলাকায়। গোলমালের আশঙ্কায় জারি হয় ১৪৪ ধারাও। লাগানো হয় সিসি ক্যামেরা। সকাল পর্যন্তও ঠিক ছিল জমি রক্ষা কমিটি সমর্থিত তৃণমূল নেত্রী তৃপ্তি বিশ্বাসকে প্রধান হিসাবে মেনে নেবেন জয়ী প্রার্থীরা। কিন্তু, বোর্ড গঠনের সময় প্রধান হবেন না বলে বেঁকে বসেন তৃপ্তি। এর পরেই আরাবুল ঘনিষ্ঠ সবিতা সর্দারের নাম প্রস্তাব করা হয়। এক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন বোর্ড গঠন হয়ে যায়।

জমি কমিটির তরফে এ দিন মির্জা হাসান বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশে এ দিন বোর্ড গঠন হয়েছে। তৃপ্তি বিশ্বাসকে প্রধান করা হবে বলে প্রথমে ঠিক ছিল। কিন্ত তার পরেও আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি ভালভাবে নিচ্ছি না। গ্রামবাসীরা প্রধান এবং উপপ্রধানকে মেনে নেবেন না।”

Advertisement

আরও পড়ুন: ছত্রধর-সহ চার মাওবাদীর যাবজ্জীবন খারিজ, বেকসুর ছাড়া পেলেন প্রসূন-রাজা

‘বাজিমাত’ করলেন আরাবুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।

আগের বোর্ডে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন হাকিমুল। কিন্তু এ বার পঞ্চায়েত প্রধানের আসনটি সংরক্ষিত ছিল। গ্রামবাসীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ইচ্ছে থাকলেও আসনটি সংরক্ষিত হওয়ায় আরাবুল পুত্র প্রধান হতে পারলেন না। তাঁর জায়গায় আরাবুল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রী সবিতা সর্দারকে জিতিয়ে আনা হল। যদিও এ বিষয়ে হাকিমুল বলছেন, “মা-মাটি-মানুষের জয়। আমি এলাকার উন্নয়নের জন্যে কাজ করব।”

আরও পড়ুন: আসুন মানবিক হই: মুখ্যমন্ত্রী

ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের সময় থেকেই আরাবুল বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন গ্রামবাসীরা। অলীক চক্রবর্তীর নেতৃত্বে গঠন করা হয় জমি রক্ষা কমিটি। প্রতিবাদ জানিয়েই ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতে প্রার্থী দেয় জমি কমিটি।ভাঙড় ২ ব্লকের পোলেরহাট ২ গ্রামপঞ্চায়েতে মোট আসন সংখ্যা ছিল ১৬টি। পঞ্চায়তে নির্বাচনে ৫ আসনে জয়ী হয়েছিলেন জমি রক্ষা কমিটি। বাকি ১১টি আসনে জিতে যায় তৃণমূল। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে ভোটারদের ভয় দেখানো হয়। বাড়ি বাড়ি হামলা চালায় আরাবুল বাহিনী। রীতমতো সন্ত্রাস চালিয়ে নির্বাচনে জিতেছে তৃণমূল।

ওই সময়ে এলাকায় শান্তি বজায় রাখার আবেদন নিয়ে জেলাশাসকের কাছে দরবার করেন গ্রামবাসীরা। পরে স্থায়ী বোর্ড গঠন না করে প্রশাসন দিয়ে পঞ্চায়েত চলছিল। ১৯ মে প্রশাসন মেয়াদ শেষ হয়। এর পর ২৫ জুন বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। তার পরই আদালতের দ্বারস্থ হয় জমি রক্ষা কমিটি। ১৪ অগাস্ট বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement