বিনয়কুমার সরকার
জাপানে মাঝ সমুদ্রে আটকে পড়া বাঙালি যুবকের আর্জিতে তাঁকে দেশে ফেরাতে তৎপর হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ফেসবুকে ওই যুবক জানান, ২৬০০ জন যাত্রীর সঙ্গে তিন দিন ধরে তিনিও জাহাজ-বন্দি। সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় বন্দরে তাঁদের নামতে দেওয়া হচ্ছে না। মানবিকতার দিক থেকে বিষয়টি বিবেচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনই দিল্লিতে তাঁর সংসদীয় দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের নির্দেশ দিয়েছেন, লোকসভা অথবা রাজ্যসভায় প্রসঙ্গটি তুলতে। যাতে কেন্দ্রের নজরে আসে এবং জাপান থেকে দ্রুত তাঁকে ফেরানোর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হয়। বর্তমানে জাহাজটি টোকিয়োর কাছে একটি বন্দরে দাঁড়িয়ে।
উত্তর দিনাজপুর জেলার চাকুলিয়ার কানকির হাতিপার এলাকার বাসিন্দা বিনয়ের দাবি, তিনি জাপানের ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামে একটি জাহাজের কেবিন ক্রু। তাঁর দাবি, এখন বন্দরে তিনি-সহ ১৬০ জন ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রু রয়েছেন, তার মধ্যে ৬ জন বাঙালি। তাঁরা সকলেই দেশে ফিরতে চান। বিনয়ের দাবি, তিনি এখনও আক্রান্ত হননি।
ফোনে বিনয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ২০ জানুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা থেকে তাঁরা রওনা দেন। ২৫ জানুয়ারি হংকংয়ে পৌঁছন। সেখান থেকে এক জন যাত্রী উঠেছিলেন। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে সন্দেহ। হংকং থেকে ফের ২৮ জানুয়ারি রওনা হয়েছিলেন তাঁরা। গন্তব্য ছিল ভিয়েতনাম। বিনয় বলেন, ‘‘২ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণের কথা জানতে পেরে দ্রুত টোকিয়োতে জাহাজ ফেরানো হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানেই একটি বন্দরে আটকে রয়েছি।’’ তাঁর দাবি, ৫ ফেব্রুয়ারি ১০ জন আক্রান্ত ছিলেন। ওই দিনই তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওযা হয়। পরে একে একে ৬১ জনের শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়। সকলে হাসপাতালে ভর্তি।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলার প্রশস্তি, সিএএ-র ‘বিরোধিতা’ করলেন ধনখড়
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিনয় সাত বছর ধরে জাপানের ওই জাহাজ সংস্থায় কর্মরত। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, বাবা ও মা উদ্বেগে রয়েছেন। তাঁর মা চন্দ্রা সরকার বলেন, ‘‘ছেলেকে সুস্থ ভাবে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক সরকার।’’ গোয়ালপোখর ২-এর বিডিও কানাইয়াকুমার রায় জানান, তিনি খোঁজ নিচ্ছেন। বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি কী পদক্ষেপ করা যায়।’’ বিজেপির জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ মৃধা বলেন, ‘‘আমরা রায়গঞ্জের সাংসদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলব।’’