শুভেন্দু অধিকারী এবং কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চ শহিদ মিনারে ৩৬২ দিন ধরে অবস্থান চালাচ্ছে। সম্প্রতি তাদেরই একটি অংশ আমরণ অনশন শুরু করেছে। মঙ্গলবার সকালে সেই মঞ্চে পৌঁছে বড় হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, ‘‘প্রায় ৭২ ঘণ্টা হতে চলল অনশন। এঁদের কারও যদি কিছু হয়, তা হলে বাংলায় আগুন জ্বলবে।’’ শুভেন্দুর এই মন্তব্যকে ‘গভীর চক্রান্তের ইঙ্গিত’ বলে মনে করছে রাজ্যের শাসকদল।
শুভেন্দু অবস্থান মঞ্চে গিয়ে বলেন, ‘‘যাঁরা আমরণ অনশনের পথে হাঁটছেন, তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী চাকরি খাওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন। যাঁরা নিজেদের দাবি বুঝে নিতে প্রাণের পরোয়া করেন না, তাঁদের চাকরি খাওয়ার ভয় দেখানো যায় না।’’ বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, ‘‘অমিত শাহ এসে আমাদের দলকে বলে গিয়েছেন, নিঃশর্ত ভাবে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনের পাশে থাকতে হবে। আমরা সেই মতোই পাশে আছি। আপনারা নবান্ন অভিযান ডাকুন। আমি থাকব।’’ এখানেই থামেননি শুভেন্দু। অনশনরতদের কিছু হয়ে গেলে ‘রাজ্যে আগুন জ্বলবে’ বলে ওই মঞ্চ থেকেই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারীরা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের ওই মঞ্চ বিরোধীদের রাজনীতি করার মঞ্চে পরিণত হয়েছে। সেখানে গিয়ে শুভেন্দু যা বলেছেন তা রাজ্যকে অশান্ত করার কোনও গভীর চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত।’’ কুণালের আরও বক্তব্য, ‘‘পুরনো ভিডিয়ো সামনে এনে রাজ্যে অশান্তি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি। এখন নতুন চক্রান্ত হচ্ছে।’’ কুণালের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার কেন্দ্রের থেকে বকেয়া পাচ্ছে না। কিন্তু তা নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মুখে কোনও কথা নেই।’’
১৯ জানুয়ারি কলকাতায় মহামিছিলের ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। মুখ্যমন্ত্রী দেখা করে সমস্যার সমাধান না-করলে অনশনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় মঞ্চের তরফে। তার পরই ২৯ জানুয়ারি থেকে রাজ্য সরকারি অফিসে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। তবে শুভেন্দু অনুরোধ করেন, মাধ্যমিক পরীক্ষায় যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে সে দিকটা যেন যৌথ মঞ্চ ভাবে। গত ডিসেম্বরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য আরও ৪ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তার পরও এই মুহূর্তে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে ডিএ-র ফারাক ৩৬ শতাংশের। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁদের কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে।