মহুয়া মৈত্র এবং জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। —ফাইল চিত্র।
‘অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’ মামলায় এ বার প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে তলব করল সিবিআই। আগামী বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় তাঁকে লোদী রোডের সিবিআই দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছে। দেহাদ্রাইকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ নিয়ে তাঁকে সিবিআইয়ের সামনে হাজির হতে হবে।
চিঠির বিষয়বস্তু হিসাবে বলা হয়েছে, ‘মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত’-এর জন্যই এই তলব। তাই মনে করা হচ্ছে, ‘অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’ মামলাতে দেহাদ্রাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে দেওয়া সিবিআইয়ের চিঠি। ছবি: সংগৃহীত।
মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাইয়ের নাম করে একটি বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। স্পিকার ওম বিড়লাকে লেখা চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, ‘টাকার বিনিময়ে’ সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায়। দুবে জানান, দেহাদ্রাই তাঁকে যে চিঠি দিয়েছেন, তার উপর ভিত্তি করেই তিনি এই অভিযোগ করছেন। দুবের দাবি, মহুয়া যে প্রশ্ন করার বিনিময়ে ব্যবসায়ী হীরানন্দানির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন, এ ব্যাপারে দেহাদ্রাইয়ের কাছে ‘অকাট্য প্রমাণ’ রয়েছে। যদিও গোটা বিষয়টিকেই মনগড়া বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মহুয়া। দুবে এবং দেহাদ্রাইকে আইনি নোটিসও পাঠান তিনি।
দুবে জানান, মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় লোকপাল। তার আগে থেকেই মহুয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলছিলেন দুবে এবং দেহাদ্রাইরা। প্রসঙ্গত, ‘লোকাযুক্ত এবং লোকপাল আইন, ২০১৩’ অনুসারেই তলবি চিঠি দেওয়া হয়েছে দেহাদ্রাইকে।
তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে জেনে মহুয়া বলেছিলেন, ‘‘সিবিআই কি বেকার? আদানিদের ১৩ হাজার কোটি টাকার কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে এফআইআর ফাইল করছে না কেন সিবিআই?’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় সুরক্ষা? আদানি এন্টারপ্রাইজ়ের আসল মালিক কে? বিদেশি বিনিয়োগকারী, যার মধ্যে চিন এবং আরব আমিরশাহির নাগরিক রয়েছেন, তাঁরা দেশের সব বন্দর কিনে নিচ্ছেন আর ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ছাড়পত্র দিচ্ছে! জাতীয় সুরক্ষার এই বিষয়টা আগে দেখা হোক। তার পরে আমার কত জোড়া জুতো তা যদি গুনতে চায় সিবিআই, তা হলে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।’’
সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর লোকসভার এথিক্স কমিটি তৃণমূল সাংসদকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে। এথিক্স কমিটি তাদের রিপোর্টে বলে, ‘‘মহুয়া মৈত্র এবং ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির মধ্যে যে টাকার লেনদেন হয়েছে, কেন্দ্রের উচিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার আইনি এবং প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত করা।’’ গত ৮ ডিসেম্বর লোকসভায় ধ্বনিভোটে মহুয়াকে বহিষ্কারের প্রস্তাব পাশ করানো হয়।