হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও ভাঙড়ের পোলেরহাট-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে মনোনয়ন পেশ করতে পারেননি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এর আগে মনোনয়ন পেশে বাধা পেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ভাঙড় কৃষিজমি রক্ষা কমিটি। আদালতে তাঁরা অভিযোগ করেন, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে ১১টিতে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। সোমবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শান্ডিল্যের কাছে জানতে চান, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনগুলিতে এখনও পর্যন্ত কত জন করে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সচিব জানান, এক জন করেই দিয়েছেন।
তা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে, মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে প্রার্থীরা কোনও ভাবে বাধা পেয়েছেন।’’ এর পরে বিরোধীদের মনোনয়ন পেশের ব্যবস্থা করার জন্য সচিবকে নির্দেশ দেন বিচারপতি তালুকদার। এ-ও জানিয়ে দেন, নির্দেশ মানা না-হলে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হবে কমিশনের বিরুদ্ধে। বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছেন কি না, সচিব আজ, মঙ্গলবার তা আদালতে জানাবেন।
কিন্তু কমিটির অভিযোগ, এর পরেও তাঁদের প্রার্থীদের কাউকে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি শাসক দলের মদতে পুষ্ট দুষ্কৃতীরা। কমিটির তরফে কুশল দেবনাথ বলেন, ‘‘আমাদের ১১ জন প্রার্থীর মনোনয়নের কাগজপত্রই দুর্বৃত্তেরা কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। প্রার্থীদের মারধরও করা হয়।’’ কমিটির নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরীকে ঘিরে ধরে মারধর করা হয় ও তাঁর পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলেও কমিটির অভিযোগ। কুশল জানান, শর্মিষ্ঠার ফোনের সিম খুলে নেওয়া হয়। এমনকী বেশ কিছুক্ষণ তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
সন্ধ্যায় আলিপুর থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেন শর্মিষ্ঠারা। তিনি জানান, আদালতের রায়ের আগেই তাঁদের ১১ জন প্রার্থীর মনোনয়ন হোয়াটসঅ্যাপ করে ভাঙড় ২-এর বিডিও-র কাছে পাঠানো হয়েছিল। বিডিও তার প্রাপ্তিস্বীকারও করেছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত আইন মোতাবেক কাগজপত্র জমা দিতে না পারায় সেই মনোনয়ন বৈধ হবে কি না, সে ব্যাপারে কমিটি সংশয়ে।
এ দিনই পিডিএস এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে বিচারপতি তালুকদারের আদালতে। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন শুধু মনোনয়ন জমার মেয়াদ বাড়িয়েছে এবং প্রত্যাহারের দিন ঘোষণা করেছে। পঞ্চায়েত ভোটের আইন মেনে নির্বাচনের নতুন নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণা করেনি। আজ, মঙ্গলবার এই দু’টি মামলার শুনানি হতে পারে।