প্রতীকী ছবি।
আদালতে গিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন রদ করার কোনও উদ্দেশ্য তাদের ছিল না বলেই জানাচ্ছে বিরোধীরা। বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি— তিন বিরোধীকেই কড়া আক্রমণ করে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বলেছেন, ভোট আটকানোর জন্য তারা ‘জোট বেঁধে ঘোঁট’ পাকিয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতেই বিরোধীদের জবাব, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে আইনি লড়াইয়ে যেতে হয়েছে অনন্যোপায় হয়েই।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের বিরোধী বন্ধুরা হামলা আর মামলা করেছেন। জোট, ঘোঁট আর কোর্ট করে ভোট আটকাতে চেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা সফল হননি। এ বার শান্তিতে ভোটটা হতে দিন!’’ বিরোধী নেতাদের মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নিজেই কলকাতা হাইকোর্টের দু’টি এজলাসে তিনটি শুনানিতে সাড়ে চার ঘণ্টা সওয়াল করেছেন। তাঁর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ভোটের দিন হিংসা ঠেকানোর জন্য ‘দায়বদ্ধ’ করেছে আদালত। আইনি সওয়াল করায় অধীরবাবুকে কড়া আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
অধীরবাবু রবিবার বলেন, ‘‘কংগ্রেস ক’টা আসনে প্রার্থী দিতে পারবে, তার জন্য আদালতে যাইনি। কত মানুষ ভোট দিতে পারবেন, সেটা আরও জরুরি প্রশ্ন। সেই জন্যই নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে মহামান্য বিচারপতিদের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছি।’’ তাঁর বক্তব্য, আদালত নির্দেশ দিয়েছে ভোটের দিনের ঘটনার কথা মাথায় রেখে। কিন্তু ভোটের দু’দিন আগে থেকে গ্রামেগঞ্জে যে ‘হুমকি’ শুরু হয়েছে, তা ঠেকাতে কমিশন সক্রিয় হয়নি। একই সুরে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব এ দিন আলিমুদ্দিনে বলেন, ‘‘কমিশন বিরোধীদের কথা শুনতেই চাইছে না। অথচ আদালত কমিশনকেই ভার দিয়েছে। কাল ভোটের দিন হিংসার ঘটনা ঘটলে কলকাতাতেই আমরা প্রতিবাদে নামব, গ্রামবাংলাতেও মানুষ প্রতিরোধ করবেন।’’ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘আমরা ভোট আটকাতে চাইনি, পিছোতেও চাইনি। আমাদের শুধু লক্ষ্য ছিল, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তার বন্দোবস্ত যেন প্রশ্নাতীত হয়।’’
বিরোধীরা অশান্তির অভিযোগ ও আশঙ্কা করলেও মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এ দিন সব দলের কাছেই আর্জি জানিয়েছেন, ভোটে শান্তি বজায় রাখতে। প্রশাসনও সতর্ক থাকছে বলে তিনি জানিয়েছেন। আর রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহ এই নিয়ে মুখ খোলেননি।