ফাইল চিত্র।
বাজে খরচের যে অবকাশ নেই, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের নজরদারির যে পদ্ধতি, তাতে বদল আনতে হচ্ছে দফতরগুলিকে। সেই সূত্রেই প্রকল্প-এলাকা থেকে সরাসরি অগ্রগতির নজরদারি পদ্ধতি চালু হয়েছে পূর্ত দফতরে। প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, টাকার অপচয় রুখতে এবং সময়ের সীমা মান্য করার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর হবে।
প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, প্রকল্প শুরুর আগে কবে তা শেষ হবে, তার একটা প্রাথমিক অনুমান করে নেওয়া হয়। কিন্তু অতীতে একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রকল্প নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে শেষ হয়। ফলে প্রকল্পের খরচের প্রাথমিক যে অনুমান থাকে, তা ছাপিয়ে যায় সময়বৃদ্ধির সঙ্গে। গত বছর থেকে বিভিন্ন দফতরের খরচে লাগাম টানা হয়েছে।
এ বছর ব্যয়বহুল একাধিক সামাজিক প্রকল্প কার্যকর হওয়ায় খরচের কড়াকড়ি অনেক বেড়েছে। ফলে শুধুমাত্র সময়সীমা বাড়ার কারণে বেশি খরচ করার ‘বিলাসিতা’ এখন আর যে চলবে না, তা বিলক্ষণ বুঝছে সরকার। সেই কারণেই এই পদ্ধতি চালু হয়েছে, যাতে বিভিন্ন দফতর এবং জেলাপ্রশাসনগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে সময়ের মধ্যে কোনও প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়।
প্রসঙ্গত, অতীতে একাধিকবার প্রকল্পের সময়সীমা এবং খরচ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষমহল সব দফতরকেই সতর্ক করেছিল। বাজে খরচ যে রুখতেই হবে, সেই বার্তাও সম্প্রতি দফতরগুলিকে দিয়েছেন প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। সেই দিক থেকে নজরদারির এই পদ্ধতিকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
কেমন হচ্ছে সেই নজরদারি?
দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ঘুরে ঘুরে প্রকল্পের নজরদারি করে দফতরের কর্তাদের রিপোর্ট দেওয়া বহু প্রচলিত রীতি। কিন্তু এখন কোনও প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ‘লাইভ’ বৈঠকের মাধ্যমে। যেমন, কোনও চালু প্রকল্প এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার উপস্থিত থাকছেন। নবান্নে বসে দফতরের সচিব এবং অন্য কর্তা-ইঞ্জিনিয়ারেরা সরাসরি ভিডিয়ো মাধ্যমে সেই প্রকল্পের কাজকর্ম খতিয়ে দেখছেন।
প্রকল্প এলাকা থেকে প্রকল্পের খুঁটিনাটি অগ্রগতি ব্যাখ্যা করছেন সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার। কোথাও কোনও সমস্যা থাকলেও তা বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে জেলা প্রশাসন এবং পূর্ত বিভাগকেও সক্রিয় করার কাজ চলছে সমান্তরাল ভাবে। এ ছাড়াও ড্রোন নজরদারির সুবিধা রাখা হচ্ছে বলে খবর।
এক কর্তার কথায়, “আগে কোনও প্রকল্পে সমস্যা তৈরি হলে তা জানতে এবং সমাধানের জন্য স্বাভাবিক নিয়মেই কিছুটা সময় ব্যয় হত। কিন্তু এখন পুরোটা সরাসরি ভিডিয়ো মাধ্যমে হওয়ায় সমস্যা এবং সমাধান-দুটোই একসঙ্গে করা যাচ্ছে। কারণ প্রকল্পের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতার একটা বিষয় থাকে। দফতরের থেকে সরাসরি নির্দেশ পাওয়া গেলে সময়ের অপচয় আটকানো সম্ভব। এতে কাজের গুণমানও বজায় রাখার চাপ থাকবে।”