ছবি: সংগৃহীত।
দাবিদারহীন মৃতদেহ সৎকার নিয়ে সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। রাজ্য প্রশাসনকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিষয়টিকে ভাল ভাবে নেয়নি সুপ্রিম কোর্টও। এ বার এমন মৃতদেহ সৎকারের ক্ষেত্রে আদর্শ বিধি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা এসওপি) তৈরির পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার।
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, সব ধরনের আইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নিয়মকানুন একত্রিত করে অভিন্ন একটি বিধি তৈরি হবে। দাবিদারহীন হলেও মৃতদেহকে মর্যাদা দেওয়াই হবে তার মোদ্দা বক্তব্য।
কয়েক দিন আগে দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার একটি শ্মশানে দাবিদারহীন মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল প্রশাসন। এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষমহলের জবাবদিহি তলব করে রাজভবন। কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার রাজ্যপালকে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিলেও সমালোচনা বন্ধ হয়নি। উপরন্তু রাজভবনের সঙ্গে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের কার্যত বাগযুদ্ধ বেধে যায়। ওই মৃতদেহগুলি নিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টও সমালোচনা করে।
পুলিশ মহলের খবর, কলকাতা পুলিশ আইন ও পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল, দু’টি আইনেই এমন মৃতদেহ সৎকারের পদ্ধতির বিবরণ রয়েছে। কিন্তু সুসংহত কোনও বিধি আকারে সে সব না থাকায় অনেকের কাছে সেগুলি প্রায় অজানা থেকে যায়। প্রায় তিন দশক আগে আদালতের রায় ছিল, ‘ডিকম্পোজড’ মৃতদেহ সাত দিনের মধ্যে সৎকার করে ফেলতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যুতে দাবিদারহীন মৃতদেহের জেনারেল ডায়েরি (জিডি) থাকতে হয় পুলিশের কাছে। হাসপাতালে স্বাভাবিক ভাবে মৃত ব্যক্তির দেহের দাবিদার পাওয়া না গেলে হাসপাতালের টিকিটই নথি হিসেবে বিবেচিত হয়। নির্দিষ্ট সময় পরে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে দেহগুলি সৎকারের ব্যবস্থা হয়।
কলকাতা পুর-প্রশাসন সূত্রের খবর, স্থানীয় প্রশাসন হিসেবে তাদের পুলিশ বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করলে দাবিদারহীন মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। জেলাগুলিতেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর মর্গ খালি করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট এসওপি থাকলে বিতর্ক তৈরির সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন পুলিশ মহলের অনেকে।