মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের।
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন নিয়ে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ করল বিজেপি। রাজ্য সরকারের ‘মাল্টি অর্গান ফেলিওর’ হয়েছে—সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এমন তোপই দাগলেন।
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে শুক্রবার জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘এই আন্দোলনকে চিকিৎসক বনাম রোগীর লড়াইয়ের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।’’তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের অন্তিম সময় এসে গিয়েছে। চলে যাওয়ার আগের পর্ব চলছে।’’
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। শহর কলকাতায় প্রায় কোনও হাসপাতালেই পরিষেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালেও পরিস্থিতি প্রায় একই। ৪ দিনেও এই অচলাবস্থা কাটল না। উল্টে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। আরও কঠোর অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। গণ ইস্তফা দিচ্ছেন একের পর এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। পথে নেমে প্রতিবাদ মিছিলে পা মিলিয়েছেন বিদ্বজ্জনরা। প্রায় সারা দেশেই মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন।
কিন্তু এই পরিস্থিতির দায় কার? বিজেপি বলছে দায় মুখ্যমন্ত্রীর। কেন? বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের যুক্তি, মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে কার্যত হুমকি দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের জেরেই ক্রুদ্ধ হয়ে চিকিৎসকরা আরও অনড় মনোভাব নিয়েছেন, মনে করছেন জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্ররা কথা বলতে চায়নি বলে উনি এমন আচরণ করছেন। উনি বলছেন, আমি কেন যাব? ওঁর এই দম্ভের জন্যই এই পরিস্থিতি। উনি নিজেকে কী মনে করছেন?’’ এই ‘দম্ভের’ প্রসঙ্গেই কটাক্ষের সুরে জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘উনি বলছেন আমি এতগুলো মেডিক্যাল কলেজ করে দিয়েছি। কার টাকায় করেছেন উনি। এই টাকা কালীঘাট থেকে আসেনি। গরু পাচার, সোনা পাচারের টাকা থেকে আসেনি। এই টাকা রাজ্যের সাড়ে ন’কোটি মানুষের করের টাকায় করেছেন। সব কিছুতে এই ‘আমি করেছি’ ‘আমি করেছি’র দম্ভ কবে বন্ধ করবেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন তুলেছেন জয়প্রকাশ।’’
আরও পডু়ন: আন্দোলনে আরও গতি, ১৭ জুন দেশ জুড়ে হাসপাতাল ধর্মঘটের ডাক দিল আইএমএ
আরও পডু়ন: সরকারি ডাক্তারদের গণইস্তফার ঢেউ, ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
শুধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতির উল্লেখ করে জয়প্রকাশের খোঁচা, ‘‘এই সরকারের মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চিতিৎসকরা গণ ইস্তফা দিচ্ছেন। আইনজীবীরা এক-দেড়মাস কর্মবিরতি চালিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা নেই। সূতরাং সরকারের শেষ অবস্থায় একাধিক অঙ্গ কাজ করছে না।’’