ছবি: সংগৃহীত।
দেশের পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির উন্নয়ন প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ যোগ দেয়নি। তার পরে কোন রাজ্য জলসঙ্কট সামলাতে কতখানি সাফল্য দেখাচ্ছে, নীতি আয়োগ তার সূচক তৈরি করে। সেই সূচকে বাংলা কোথায়, তার পরিসংখ্যানই দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ। এ বার স্কুলশিক্ষায় কোন রাজ্য কতখানি উন্নতি করেছে, নীতি আয়োগের তৈরি সূচকের জন্যও কোনও পরিসংখ্যান দিল না পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
সোমবার ‘স্কুলশিক্ষা মান সূচক, ২০১৯’ প্রকাশ করেছে নীতি আয়োগ। কোনও তথ্য না-দেওয়ায় স্কুলশিক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান এখন কোথায়, তা বোঝা যাচ্ছে না। নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত এ দিন বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ কোনও তথ্যই দেয়নি। তাই রিপোর্টেও পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটেনি।’’ গত বছর অবশ্য মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের করা দেশের স্কুলশিক্ষার ‘পারফর্মিং গ্রেডিং ইনডেক্স’ সমীক্ষায় যোগ দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। সমীক্ষার ভিত্তিতে ছ’টি গ্রেডের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান হয়েছিল পঞ্চম গ্রেডে। দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে সেই সমীক্ষায় বাংলার স্থান হয়েছিল পঁয়ত্রিশে। কিন্তু নীতি আয়োগের সমীক্ষায় কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণেই নীতি আয়োগের সূচক তৈরিতে তথ্য দেওয়া হয়নি।
মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদে সব মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাননি। নীতি আয়োগের বৈঠককে ‘নিষ্ফলা’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। তার আগে দেশের পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, এটা রাজ্য সরকারকে টপকে জেলা প্রশাসনে কেন্দ্রের নাক গলানো। উন্নয়নে বাড়তি জোর দেওয়ার জন্য সামাজিক উন্নয়নের নানা মাপকাঠিতে সব থেকে পিছিয়ে পড়া ১১৭ জেলাকে চিহ্নিত করে নীতি আয়োগ। তাতে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি জেলা থাকলেও রাজ্য এই প্রকল্পে যোগ দেয়নি।
হতাশা ব্যক্ত করে নীতি আয়োগের সিইও জানিয়েছিলেন, তাঁরা অনুরোধ করা সত্ত্বেও রাজ্যের সাড়া মেলেনি। অন্য রাজ্যগুলিতে ডিএম, কেন্দ্রের অফিসারেরা উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। শিক্ষা, পুষ্টি, কৃষি, পরিকাঠামো, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে কাজ হচ্ছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গ নেই। অনুরোধ করা ছাড়া নীতি আয়োগের কিছু করারও নেই। জলসঙ্কট নিয়ে সূচক তৈরির সময় বাংলার প্রতিনিধিরা কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু রিপোর্টের জন্য পরিসংখ্যান দেননি।
রাজ্যের উন্নয়নে কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নে রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০৩০ সালের জন্য যে-লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে, তাতে কোন রাজ্য কী অবস্থানে রয়েছে, সেই বিষয়ে নীতি আয়োগের তৈরি রিপোর্টে তথ্য দিয়েছে বঙ্গ। গত জুনে স্বাস্থ্যের মাপকাঠি নিয়ে তৈরি সূচকেও যোগ দেয় বাংলা। আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার বলেন, ‘‘রাজ্যগুলির উন্নয়নের জন্যই রিপোর্ট তৈরিতে সব রাজ্যের সহযোগিতা দরকার। পশ্চিমবঙ্গ সহযোগিতা না-করলে কী ভাবে চলবে!’’