—প্রতীকী ছবি।
এক সময়ে বাংলা সিনেমা জগতে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন কমল মিত্র। তাঁর অভিনয় এবং গলার স্বরে মোহিত থেকেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাংলা সিনেমার দর্শকরা। কিন্তু ভোট-বঙ্গে সেই কমল মিত্রকে নিয়েই ফাঁপরে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। বাধ্য হয়ে খুঁজছে বিকল্প নাম।
বহিরাগত তকমায় বাংলায় ধাক্কা খেতে হয়েছে গত বিধানসভা নির্বাচনে। সেই থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে বাংলায় জনপ্রিয় করতে বাংলা নাম খুঁজছে বঙ্গ বিজেপি। কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পকে বিভিন্ন রাজ্যে জনপ্রিয় করতে স্থানীয় নামকরণে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাংলায় কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো জনপ্রিয় প্রকল্পকে টেক্কা দিতে তাই ক্ষমতায় এলে মহিলাদের মাসে দু'জাহার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিজেপি। সেই প্রকল্পের জন্যই বাংলা নামের খোঁজে বঙ্গ বিজেপি। সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে কেন্দ্রের নারী কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে জনপ্রিয় করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। তারই অঙ্গ এই বঙ্গানুবাদের প্রয়াস।
সূত্রের খবর, ‘কমল মিত্র’ নামের একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে ধরে প্রাথমিক ভাবে বাংলায় নামের খোঁজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পে নথিভুক্ত কোনও মহিলা নিজে প্রশিক্ষণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিধানসভা ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা অন্যদের কাছে ব্যাখ্যা করেন। তাঁকে বলা হয় ‘কমল মিত্র’। সাধারণ মহিলারা নাম নথিভুক্ত করলে যে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মুদ্রা লোনে’র মতো প্রকল্পের সুবিধা পান তাই নয়, ওই রাজ্যের সরকার যদি বিজেপি পরিচালিত হয় তাহলে সেই রাজ্য সরকারের থেকেও বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। একই ভাবে মধ্যপ্রদেশ ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্প শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ যেমন তাদের মতো করে এই প্রকল্পের নাম করণ করেছে। বাংলায়ও তেমন একাধিক প্রকল্পের নামকরণের খোঁজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি আইসিসিআর-এ সংযুক্ত মোর্চার সম্মেলন থেকে এই নাম করণের দায়িত্ব বঙ্গ বিজেপির মহিলা মোর্চার উপর ছাড়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপির বাকি মোর্চাদেরও ঠাসা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। যুব সংগঠনকে আগামী ১২ থেকে ২৪ জানুয়ারি প্রতিটি শক্তিকেন্দ্রে ‘লোকপাল সভা’ করতে বলা হয়েছে। জনজাতি মোর্চাকে অবিলম্বে ‘বস্তি সম্পর্ক অভিযান’ শুরু করার ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জনজাতি হোস্টেলে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কিষাণ মোর্চাকে ‘গ্রাম পরিক্রমা’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংখ্যালঘু মোর্চাকে তিন তালাক বিরোধী প্রচারে নামতে বলা হয়েছে। উপজাতি মোর্চাকে ‘সাব-কাস্ট’ সম্মেলন করতে বলা হয়েছে।
কলকাতায় এসে শনিবার কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, “মোদী সরকার সব শ্রেণির মানুষের সুবিধার জন্য যা করেছে, তাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তাঁরা গত বারের থেকে দ্বিগুণ সমর্থন পাবেন।” পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “২০১১ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে গিয়েছে। মাঝের ৩৪ বছরের অপশাসন ভুলে মানুষ নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে। আগামী দিন বাংলার ছাত্র, যুব, মহিলা সমাজ দেশকে দিশা দেখাবে। যার নেতৃত্বে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”