আনোয়ারুল আজিম। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিমকে কলকাতায় ডেকে এনে খুন করার আগে ওই ঘটনায় অভিযুক্তেরা ২০২০ সালে আর এক বাংলাদেশি নাগরিককে কলকাতার উপকণ্ঠে নরেন্দ্রপুরে খুনের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সেই বার তারা সফল হতে পারেনি ভাড়া বাড়ির মালিকের তৎপরতায়। চার বছর আগের ওই ঘটনায় অভিযুক্তেরা কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল পুলিশ তাদের নাগাল পাওয়ার আগেই। ভবানী ভবন সূত্রের খবর, ওই ঘটনার নতুন করে তদন্ত শুরু হতে চলেছে। সিআইডির হাতে সেই তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে।
সিআইডি সূত্রের খবর, আনোয়ারুল আজিমকে খুনের ঘটনায় মূল চক্রী আমেরিকার নাগরিক আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিন। তার নির্দেশেই ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে আজিমকে কলকাতায় ডেকে এনে খুন করে তাঁর দেহ লোপাট করে দেওয়া হয়। শাহিন পালিয়ে গেলেও ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মহম্মদ সিয়াম এবং জিয়াদ হাওলাদারকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এ রাজ্যের পুলিশের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেফতার করেছে আমানুল্লা, ফয়জ়ল, মুস্তাফিজুর এবং শেলেস্তা রহমান নামে চার অভিযুক্তকে। যারা ঘটনার সময় নিউ টাউনের আবাসনে উপস্থিত ছিল।
তদন্তকারীরা জানান, সিয়াম জেরার মুখে স্বীকার করেছে যে, আজিমকে ডেকে এনে খুন করার আগে, ২০২০ সালে শাহিনের নির্দেশে সে ও আমানুল্লা আর এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে নরেন্দ্রপুরে খুনের ছক করেছিল। সে জন্য নরেন্দ্রপুরের একটি জায়গায় শাহিনের নির্দেশ মতো বাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও ভাবে সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। তার জেরেই বাড়ি ফাঁকা রেখে পালিয়ে যায় তারা।
সিআইডি জানায়, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ফাহিম মোতিজুর রহমান নরেন্দ্রপুর থানায় মামলা রুজু করেছিলেন। সেটির তদন্তই এ বার সিআইডি করবে। এক তদন্তকারী বলেন, “দু’টি ক্ষেত্রেই সিয়াম এবং আমানুল্লাকে কাজে লাগিয়েছিল শাহিন। তাদের থাকা খাওয়ার পুরো খরচ বহন করেছিল সে।”
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, আজিমকে খুনের জন্য ফয়জ়ল এবং মুস্তাফিজুরকে এ দেশে আসার ভিসা এবং পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়েছিল শাহিন। যা তার ঢাকার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে ঢাকা পুলিশ। গোয়েন্দাদের দাবি, এর থেকেই প্রমাণ হচ্ছে যে, শাহিন আমেরিকা পালিয়ে গেলেও ওই ঘটনার নেপথ্যে প্রধান চক্রী আসলে সে-ই ছিল।