এর আগে শেষ স্কুল কলেজ খুলেছিল ১৬ নভেম্বর। ফাইল চিত্র ।
৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যে আবার খুলছে স্কুল। তার জেরেই কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলাগুলিতে প্রস্তুতি তুঙ্গে। সরস্বতী পুজোর আগে আগেই খুলে যাচ্ছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনা আবহে এর আগে শেষ স্কুল কলেজ খুলেছিল ১৬ নভেম্বর। এর পর করোনা স্ফীতির জেরে ৩ জানুয়ারি আবার বন্ধ হয় স্কুল। করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় মুখ্যমন্ত্রী গতকালই স্কুল কলেজ খোলার কথা ঘোষণা করেছেন ।
স্কুলে-স্কুলে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে স্যানিটাইজেশনের কাজ। কড়া নজরদারি থাকছে করোনা বিধিতেও। ব্যান্ডেল বিক্রমনগর নীরদা সুন্দরী ঘোষ বিদ্যামন্দির স্কুলে ক্লাস রুম-সহ দরজা-জানালা-বেঞ্চ-টেবিল সব স্যানিটাইজ করার কাজ শুরু হয়েছে। স্কুল খোলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈকত দাস জানান, শিক্ষা দপ্তরের স্কুল খোলার নির্দেশ আসা মাত্রই সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানানো হয়েছে। পড়ুয়াদের বসার বেঞ্চগুলিও আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে মালদহ শহরেরও বিভিন্ন স্কুলে সাফাইয়ের কাজ চলে। মালদা বার্লো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দীপশ্রী মজুমদার জানিয়েছেন, বিদ্যালয় এবং শ্রেণিকক্ষগুলি পঠনপাঠনের যোগ্য করে তুলতে সাফাই এবং স্যানিটাইজেশনের-এর কাজ শুরু হয়েছে।
কোচবিহার এবং শিলিগুড়িতেও স্কুল খোলার আগে প্রস্তুতি তুঙ্গে। কোচবিহার সদর গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মলয়কান্তি রায় বলেন, ‘‘আগামী তিন তারিখ থেকে স্কুল খুলছে। ইতিমধ্যেই সেই বিষয়ে আমরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং হয়েছে। নতুন করে রুটিন তৈরি করা হচ্ছে।’’ কিন্তু পাড়ায় শিক্ষালয় নিয়ে শিক্ষকরা বিভ্রান্ত বলেও তিনি জানান।
তবে স্যানিটাইজিং নিয়ে অন্য চিত্র শিলিগুড়ি নেতাজি বয়েজ হাই স্কুলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব ঘোষ জানান, ‘‘স্কুল বন্ধ হওয়ার পরও নিয়মিত স্কুল পরিচ্ছন্ন রাখা হয়েছে। সেই জায়গায় নতুন করে স্যানিটাইজ করার কিছু নেই। তবে বিধিনিষেধ মেনেই চলবে স্কুল। ইতিমধ্যেই অভিভাবকদের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তাঁদের আশ্বস্তও করা হয়েছে।
বাঁকুড়াতেও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে জোরকদমে চলছে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার রাখার কাজ। প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যালয়গুলির পাশাপাশি বাঁকুড়ার জেলা সদর শহরের বিদ্যালয়গুলির শ্রেণিকক্ষে চেয়ার, টেবিল, ডেস্কে জমেছে পুরু ধুলোর আস্তরণ। উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিছু জানালা ও দরজায় উই পোকা বাসা বেঁধেছে। সেই কারণেই বাঁকুড়ায় অতিরিক্ত তত্পরতায় বিদ্যালয় পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
বর্ধমান শহরে তৎপরতা দেখা দিল অভিভাবকদের মধ্যেও। বি সি রোড এলাকায় বেশ কিছু দোকান আছে যাঁরা স্কুলের পোষাক বিক্রি করেন। সেখানেই ভিড় জমিয়েছেন অভিভাবকরা। অভিভাবক কমল রায় বলেন, ‘‘এতদিন অনলাইনে পড়াশুনা চলছিল। সে শুধু দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। স্কুল খুলে খুব ভাল হল। সারাদিন ঘরে থেকে শিশুরা মানসিক ভাবে একলা হয়ে পড়েছে। তাই আজ এই আনন্দে জামাকাপড় কিনতে আসা।’’
বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে বলে আনন্দে মেতেছে কচি-কাঁচারাও।