গণনার দ্বিতীয় দিনেই পুলিশকে জানান বিডিও। ছবি: সংগৃহীত
পঞ্চায়েতের ভোটগণনায় কারচুপির অভিযোগে বিজেপি যখন সরব, তখন নতুন এক তথ্য প্রকাশ্যে এল। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের গণনাকেন্দ্রের সিসিটিভি ক্যামেরা চুরি হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বয়ং বিডিও। ভোট গণনা ১১ জুলাই শুরু হলেও চলে ১২ জুলাই পর্যন্ত। সেই দিনই স্থানীয় থানায় ক্যামেরা চুরির অভিযোগ দায়ের করেছিলের বালুরঘাটের বিডিও অনুজ সিকদার। তিনি ক্যামেরা চুরি হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মহকুমা শাসক, জেলা শাসককেও।
পঞ্চায়েত ভোটে সর্বত্র সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে তা সম্ভব নয় জানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৯৫ শতাংশ বুথে ক্যামেরা লাগানো হবে বলে জানিয়েছিল। এর পরেও সর্বত্র ক্যামেরা ছিল না বলে ইতিমধ্যেই আদালতে গিয়েছে রাজ্য বিজেপি। হাই কোর্ট প্রতিটি ভোটগণনা কেন্দ্রেও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ছিল না বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। ভোট গণনায় নানা কারচুপির অভিযোগ পাওয়ার পরে হাই কোর্ট ইতিমধ্যেই অনেক জায়গারই সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা দিতে বলেছে। তবে বালুরঘাট ব্লকের ক্ষেত্রে তা আদৌ সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, ১২ জুলাই মধ্যরাতেই বিডিও বালুরঘাট থানার আইসিকে চিঠি দিয়ে ক্যামেরা চুরি যাওয়ার বিষয়ে ডায়েরি করেন।
পুলিশকে জানানো হয়েছে, বালুরঘাট কলেজের কেবি-৫ নম্বর ঘরে ক্যামেরাটি লাগানো ছিল। সাদা-কালো রঙের ওই ক্যামেরাটি কোন সংস্থার তৈরি, তার মডেল নম্বর ইত্যাদি জানিয়ে থানায় ডায়েরি করা হয়। একই সঙ্গে চিঠিতে বলা হয়েছে, ক্যামেরায় থাকা ‘মেমোরি কার্ড’ যার মধ্যে গণনার সময়ের ছবি থাকার কথা, সেটিও চুরি গিয়েছে। থানায় করা অভিযোগে বিডিও এটাও উল্লেখ করেছেন যে, ওই চিঠিকে যেন চুরি যাওয়ার ঘটনার সরকারি রেকর্ড হিসাবে গণ্য করা হয়। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করার আর্জিও জানানো হয়েছে। ক্যামেরা এবং মোমোরি কার্ড পাওয়া গেলে তা যেন সঠিক জায়গায় ফেরত দেওয়া হয়, তার আর্জিও জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই চিঠিটি টুইট করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
এই চিঠিকে সরকারি নথি হিসাবে গ্রহণ করারও আর্জি।
এ নিয়ে সুকান্তের বক্তব্য, ‘‘এটা একটা জায়গায় নয়, অনেক জায়গাতেই হতে পারে। আসলে আদালতের নির্দেশ মানেইনি নির্বাচন কমিশন। এখন চাপে পড়ার ভয়ে এ সব করছে। আমার কাছে খবর আছে, যে সংস্থানে ক্যামেরা লাগানোর বরাত দেওয়া হয়েছিল, তাদের অনেক জায়গায় মেমোরি কার্ড লাগাতেই বলেনি। অনেক ক্যামেরা আসলে ‘লোক দেখানো’ ছিল।’’ বালুরঘাটের ক্যামেরা চুরি প্রসঙ্গে অবশ্য দলের তরফে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয় তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক বিষয়। পুলিশ তদন্ত করবে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনও তদন্ত করতে পারে। দলের কোনও বিষয় নয়।’’