বেসিনেই বাসন মাজা নবান্নে

লোকজন খেয়ে যে বেসিনে মুখ ধুচ্ছে, সেখানেই খাওয়ার থালা ধুচ্ছেন ক্যান্টিনকর্মী— এমনটা আবার হয় নাকি? উত্তর মিলবে, হয় নয়, হচ্ছে। এবং সেটা খাস নবান্নে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৪
Share:

লোকজন খেয়ে যে বেসিনে মুখ ধুচ্ছে, সেখানেই খাওয়ার থালা ধুচ্ছেন ক্যান্টিনকর্মী— এমনটা আবার হয় নাকি? উত্তর মিলবে, হয় নয়, হচ্ছে। এবং সেটা খাস নবান্নে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর অফিস নবান্নে যাওয়ার পরে সরকারি কর্মীদের জন্য একতলায় তিনটি ক্যান্টিন করে পূর্ত দফতর। একটি চালায় মহিলা সমবায়, অন্য দু’টির আগে থেকেই মহাকরণে দোকান ছিল। সরকার থেকে ক্যান্টিনে টেবিল-চেয়ার পেতে দেওয়া হয়েছে। মহাকরণে শুধু দোকান থেকে খাবার কিনে খাওয়ার বন্দোবস্ত ছিল, নবান্নে বাড়ির খাবার এনেও ক্যান্টিনে খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। সকাল ১০টার আগেই শুরু হয় বিকিকিনি। সরকারি কর্মচারী, পুলিশ ও বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীরাই নন, নবান্নে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষও ওই সব ক্যান্টিনে খাবার খান।
কিন্তু সেই খাবারের থালা কী ভাবে ধোওয়া হয়, তা এক বার নজর করলে আর নবান্নের ক্যান্টিনে দ্বিতীয় বার পাত পাড়বেন না কেউ। সেটা কেমন? ক্যান্টিনের এক কোণে হাত ধোওয়ার দু’টি বেসিন করে দিয়েছে পূর্ত দফতর। বাসন মাজার পৃথক জায়গা ভবনের বাইরে। কিন্তু দোকানের কর্মীরাই সেখানে বাসন মাজেন না। আমজনতা যেখানে ভাত খেয়ে মুখ ধোয়, সেখানেই ডাঁই হয়ে পড়ে থাকে বাসন। লোকজনের মুখ ধোওয়ার ফাঁকে তা মেজে দোকানে নিয়ে যান সাফাইকর্মীরা। যে কাপড় দিয়ে টেবিল মোছা হয়, তা বুলিয়েই ফের খাবারের থালা তুলে দেওয়া হয় খদ্দেরের হাতে।
ক্যান্টিনের এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই দিনের পর দিন খেতে বাধ্য হচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, এত কিছু দেখলে আর ভাত জুটবে না। কাকে বলা হবে? কে-ই বা শুনবে? ক্যান্টিনকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, অফিস শুরুর আগে বা দুপুরের টিফিনের সময়ে এত ভিড় হয় যে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে থালা মাজার সময় মেলে না। দেরি হলে লোকজন চিৎকার জোড়েন। তাই বলে একই বেসিনে মুখ ধোওয়া আর থালা মাজা? নবান্নে এটাই দস্তুর। পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাসন মাজার জন্য তো আলাদা জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। তা-ও কেন এমন চলছে, সে ব্যাপারে অবশ্যই খোঁজ নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement