পড়ুয়াদের সামনেই বচসা থেকে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন দুই শিক্ষিকা। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের একটি উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে।
এ দিন আসানসোলের ওই স্কুলে বাংলার শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী তরফদারের সঙ্গে বচসা বাধে প্রধান শিক্ষিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। ইন্দ্রাণীদেবীর অভিযোগ, তাঁকে মারধর করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। তিনি আসানসোল দক্ষিণ থানায় এ নিয়ে জেনারেল ডায়েরিও করেছেন। আসানসোল জেলা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরে থানায় রিপোর্টও জমা দিয়েছেন।
ইন্দ্রাণীদেবীর দাবি, দিন কয়েক আগে তাঁর দু’টি ম্যাগাজিন স্কুলের শিক্ষিকাদের কমনরুম থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। অনেক খুঁজেও সেগুলি পাননি তিনি। তবে ম্যাগাজিন হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি কাউকে জানাননি। পরে সেগুলি স্কুলের দুই ছাত্রীর ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়। বিষয়টি প্রধান শিক্ষিকা জানার পরে ওই ছাত্রীদের ডেকে জানতে চান, তারা সেগুলি কোথায় পেয়েছে। সদুত্তর না পেয়ে ওই দুই ছাত্রীর অভিভাবকদের স্কুলে ডেকে পাঠান। এ দিন অভিভাবকেরা স্কুলে আসেন। ইন্দ্রাণীদেবীর দাবি, তাঁদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষিকার আলোচন শুরু হতেই ম্যাগাজিনগুলি খুঁজে পাওয়ার কথা জানতে পারেন তিনি। প্রধান শিক্ষিকাকে জানান, ম্যাগাজিনগুলি তাঁর। দিন কয়েক আগে স্কুল থেকেই হারিয়ে গিয়েছিল সেগুলি। ইন্দ্রাণীদেবীর অভিযোগ, “আমার কথা শুনেই প্রধান শিক্ষিকা মন্তব্য করেন, ছাত্রীদের বাঁচাতে আমি মিথ্যে বলছি। আমি তাঁর কথার প্রতিবাদ করতেই তিনি আমাকে যথেচ্ছ মারধর করেন।” মারধর করার কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষিকা মমতাদেবী। বচসা হওয়ার কথা স্বীকার করে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “উনিই আমাকে যা নয় তাই বলেছেন, ঠেলে ফেলে দিয়েছেন।”
স্কুলের মধ্যে পড়ুয়াদের সামনে দুই শিক্ষিকার এ ভাবে গোলমালে জড়িয়ে পড়ার ঘটনার নিন্দা করেছে নানা মহল। এসটিইএ-র রাজ্য কমিটির উপদেষ্টা অসিত উপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “স্কুলে এ সব হলে পড়ুয়ারা কী শিখবে!” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান জেলা সভাপতি নিমাই মহন্তির বক্তব্য, “অনভিপ্রেত ঘটনা।” এবিটিএ-র জেলা সভাপতি অর্ধেন্দু মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “পড়ুয়ারা আমাদের দেখে শেখে। এ সব ঘটলে কী শিখবে!” ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক অসিত রায় অবশ্য জানান, এই ঘটনার ব্যাপারে কেউ তাঁকে কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখবেন। মহকুমার ভারপ্রাপ্ত সহকারি জেলা স্কুল পরিদর্শক সুরপতি প্রধানও জানান, তাঁর কিছু জানা নেই।