শারদোৎসবের সময়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাটো করতে সহায়তা বুথ, টহলদার বাইক, মহিলা পুলিশ, রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রন করা-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ করল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। সোমবার এ বছরের পুজো গাইডের উদ্বোধন করে এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “দর্শনার্থীদের সুবিধা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করি, শহরবাসী জমিয়ে পুজো উপভোগ করবেন।”
কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বারই দুর্গাপুজোর সময় শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ভিড় হয়। সেই ভিড় সামাল দিতে এ বার কয়েকটি রাস্তাকে একমুখী করা হয়েছে। কয়েকটি রাস্তায় ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি রাস্তায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে এডিসিপি (পূর্ব) জানান, নবারুণ ক্লাবের পুজো মণ্ডপ হয় জাতীয় সড়কের ধারে। এই পুজো দেখতে গিয়ে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য পুজোর দিনগুলিতে দুপুর ২টো থেকে ১২ ঘণ্টার জন্য জাতীয় সড়কে ভারী ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভিড়িঙ্গি থেকে প্রান্তিকা পর্যন্ত রাস্তায় যান চলাচলকে একমুখী করা হয়েছে।
এ ছাড়াও পুলিশ জানায়, ইস্পাত নগরীর চন্ডীদাস থেকে নিউটন, বাঁকুড়া মোড় থেকে এসবি মোড় পর্যন্ত রাস্তাকে পুজোর সময়ে একমুখী করা হয়েছে। ক্ষুদিরাম সরণির রিকল পার্ক থেকে সুহট্ট পর্যন্ত রাস্তায় সন্ধ্যার পরে যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ফুলঝোড় থেকে মামরা, স্টিল পার্ক থেকে দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাতেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে যান চলাচল। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, যানজট এবং দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য শহরের সিগন্যাল বিহীন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুজোর সময় রাত বাড়লেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মোটরবাইকের দাপাদাপি বেড়ে যায়। দুর্ঘটনাও ঘটে। এই কথা মাথায় রেখে পুজোর দিনগুলিতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশনারেট। এ দিন এডিসিপি (পূর্ব) জানান, পুজোর সময়ে শহরের রাস্তায় একটি মোটরবাইকে একসঙ্গে তিন জন আরোহী দেখলেই আটক করা হবে।
মদ্যপ গাড়ি চালকদের আটক করতে সারা রাত চলবে বিশেষ অভিযান। মহিলা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন মণ্ডপে থাকবে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ। এই জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন থানা থেকে আড়াইশো মহিলা পুলিশ কর্মীকে নিয়ে আসা হয়েছে। ঠাকুর দেখতে বেড়িয়ে কোনও দর্শনার্থী যাতে সমস্যায় না পড়েন সে দিকে নজর রাখার জন্য কয়েকটি জায়গায় তৈরি করা হয়েছে পুলিশ সহায়তা বুথ। এ ছাড়া নিয়মিত পুলিশের টহল তো থাকছেই। টহল দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছে ২২টি মোটরবাইক।
পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, এ বারের পুজো গাইডে বিভিন্ন পুজো দেখতে যাওয়ার জন্য বিস্তারিত পথ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই গাইড দেখে দর্শনার্থীরা সহজেই নিজের পছন্দের পুজো মণ্ডপে পৌঁছে দিতে পারবেন। সুনীলবাবুর আশ্বাস, “পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে শহরবাসীর সহযোগিতা চাই।”