ভোটের কাজ সেরে ফেরার পথে সিপিএমের তিন এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেও কেউ ধরা পড়েনি, উল্টে অভিযুক্তেরা লাগাতার হুমকি দিচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছেন এক এজেন্ট। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক তথা সহকারী রিটার্নিং অফিসার কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, তিনি পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনাচিতির দেবীনগরের বাসিন্দা উন্মেষ মণ্ডল, তাঁর মা মালতীদেবী ও তাঁদের প্রতিবেশী ক্ষুদিরাম মণ্ডল বেনাচিতি হিন্দি হাইস্কুলের তিনটি বুথে সিপিএমের এজেন্ট ছিলেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে দায়ের করা অভিযোগে উন্মেষবাবু জানান, ভোটের কাজ সেরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ তাঁরা বাড়ির দিকে রওনা দেন। হঠাৎ মাঝপথে কয়েক জন দুষ্কৃতী মালতীদেবী এবং ক্ষুদিরামবাবুর উপরে চড়াও হয়। উন্মেষবাবু প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। চিৎকার শুনে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরে মালতীদেবী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু উন্মেষবাবুর অভিযোগ, “ঘটনার পরে দু’দিন কেটে গেলেও কেউ ধরা পড়েনি। উপরন্তু ওই দুষ্কৃতীরা লাগাতার হুমকি দিচ্ছে। মোটরবাইকে চড়ে বাড়ি বয়ে হুমকি দিয়ে বলছে, অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে আমাদের পাড়াছাড়া করা হবে। খুন করা হবে। আমরা আতঙ্কিত।” তাঁর আরও দাবি, “অন্তত চার জনের নাম অভিযোগে উল্লেখ করা হলেও পুলিশ তাদের ধরতে উদ্যোগী হচ্ছে না।”
দুর্গাপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর দাবি, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই সে দিন আমাদের তিন এজেন্টকে মারধর করেছে। দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের বলেই পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওদের সঙ্গে কেউ নেই। তাই ছোটখাট ঘটনা ঘটলেই সেটিকে খুব বড় করে দেখানোর চেষ্টা করছে। নির্বাচন কমিশন রয়েছে, পুলিশ রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তারা নেবে।”
দুর্গাপুর থানার পুলিশ অবশ্য নিষ্ক্রিয়তার কথা মানেনি। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তদের খোঁজে ইতিমধ্যে একাধিক বার তল্লাশি হয়েছে। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “আমার কাছে অভিযোগকারীরা এসেছিলেন। ঘটনার কথা জেনেছি। পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”