কলেজ চত্বরে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
পাঠ্যক্রমের মাঝপথে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কলেজটি আর তাদের অধীনে নেই জানানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখালেন শতাধিক ছাত্রছাত্রী। বৃহস্পতিবার গোলাপবাগ মোড়ের কাছে অবস্থিত বর্ধমান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সে কলেজের ঘটনা। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে রাজবাটি ক্যাম্পাসে গিয়ে রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায় দেখা করেননি বলেও তাদের দাবি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের তরফে ৭ মার্চ একটি দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, ওই কলেজের সঙ্গে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন থেকে আর কোনও সম্পর্ক বা গাঁটছড়া নেই। ওই কলেজের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের কোনও দায়িত্বও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নেবে না বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “ওই কলেজটি রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় চলে গিয়েছে। ফলে ওই কলেজের কোনও কিছুতেই আমাদের ভূমিকা নেই। আমরা ছাত্রদের প্রশ্ন তৈরি করতে পারব না। শংসাপত্রও দিতে পারব না। অনেক দিন ধরেই ওঁদের চিঠি পাঠিয়ে ওই ভবন ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই বাড়িতে আমরা মাইক্রোবায়োলজি পাঠ্যক্রম চালু করব। কিন্তু ওরা বারবার বাড়ি ছাড়তে টালবাহানা করছিলেন। বাধ্য হয়ে আমরা সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি।”
তবে ওই কলেজের অধ্যক্ষ পি ধনশেখরণ জানিয়েছেন, একটি সংবাদপত্রে রেজিষ্ট্রারের ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে তিনি বহুবার উপাচার্য বা রেজিষ্ট্রারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওঁরা দেখা করেননি। এই কলেজে দু’টি পাঠ্যক্রমে মোট ১৩৮ জন ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছেন। এত ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যত কী হবে তা নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে পারেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার কলেজ চত্বরে দাঁড়িয়ে পড়ুয়ারাও ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। ব্যাচেলর অফ ফিজিও থেরাপির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ঋতম বন্দ্যোপাধ্যায়, মাস্টার অফ প্যাথলজির ছাত্র স্বরূপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “ওই সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন পাঠ্যক্রমে যে ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া চালাচ্ছেন, তাঁদের কী হবে, তা জানতে আমরা ৭ মার্চই রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করতে রাজবাটি গিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁর দেখা পাইনি। বারবার চেষ্টা করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কোনও উত্তর না পেয়ে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। কেন আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে, তা জানতে চাই।” কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি অচিন্ত্য মণ্ডল বলেন, “আমাদের কলেজ ২০০৯ সাল থেকেই হেল্থ ইউনির্ভাসিটির আওতায় কোর্স চালাচ্ছে। কিন্তু আগে যে ছাত্রেরা ভর্তি হয়েছেন, তাদের পাঠ্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তো আমাদের ওই বাড়িতে কলেজ চালাতে দিতে হবে।”