আগের দফায় জেলার দু’টি কেন্দ্রের ভোটেই ইঙ্গিত মিলেছিল। সেই ধারা বজায় রইল রাজ্যের চতুর্থ দফায় বর্ধমান জেলার আর একটি কেন্দ্রের ভোটেও। তিনটি কেন্দ্রেই ভোটের দিন সকাল থেকে ঢল নামল বুথে। আগের বারের থেকে প্রতি কেন্দ্রেই বাড়ল ভোটদানের হার। আর তাতে এ বার নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোটদান বাড়াতে নেওয়া নানা উদ্যোগের হাত দেখছেন প্রশাসনের কর্তারা।
ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে যত বেশি সম্ভব মানুষকে বুথে টানতে পথনাটক-সহ নানা রকম পন্থায় প্রচারে নেমেছিল নির্বাচন কমিশন। ভোট দিলে শপিং মল, সিনেমা হলের টিকিটে ছাড়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল নানা এলাকায়। এর সঙ্গে ভোটের দিন এসএমএসের মাধ্যমে বুথে কোন সময়ে ভোটারদের কেমন লাইন রয়েছে, তা জানার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বর্ধমানে। নিজের কেন্দ্র সম্পর্কে নানা তথ্য জানার বন্দোবস্ত হয়েছিল ওয়েবসাইটেও। ভোটদানের হার বাড়ার পিছনে এই সব উদ্যোগের অবদান রয়েছে বলেই মনে করছে জেলা প্রশাসন।
৩০ এপ্রিল বর্ধমান পূর্ব ও বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে ভোট হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুই কেন্দ্র মিলিয়ে প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ৭ মে, বুধবার জেলায় আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র ও বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত খণ্ডঘোষ বিধানসভা এলাকায় ভোটগ্রহণের পরে দেখা যাচ্ছে, এ বার জেলার মোট ২৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে গড়ে ২ শতাংশ ভোট বেড়েছে। জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে লোকসভায় ভোট পড়েছিল ৮১.৫৯ শতাংশ। এ বার তা হয়েছে ৮৩। সে বার জেলার মোট ৪৬,৩৩,২০৬ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছিলেন ৩৭,৮০,২৬৯ জন। এ বার ৫৪,৪৭,৫১৩ জন ভোটারের মধ্যে বুথে গিয়েছেন, ৪৫,২০,৬৯৯ জন।
জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে এ বার ভোটদান বেড়েছে আসানসোল লোকসভা এলাকায়। সেখানে গত বার ৭১.৭২ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এ বার তা দাঁড়িয়েছে ৭৭.৭৪। এই কেন্দ্রের অন্তর্গত প্রতিটি বিধানসভাতেই ভোটদানের হার বেড়েছে। এর মধ্যে কুলটিতে তা প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ ও আসানসোল উত্তরে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়েছে। বাকি পাঁচটি বিধানসভা এলাকাতেও সাড়ে তিন থেকে ছ’শতাংশ হারে ভোট বেড়েছে।
বর্ধমান জেলা নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “এ বার ভোটের হার বাড়ার পিছনে রয়েছে আমাদের প্রচার। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটারদের যে সমস্ত সুবিধা, যেমন মাথার উপরে ছাউনি, বসার ব্যবস্থা ইত্যাদি রাখা হয়েছিল। এসএমএসে বুথের লাইন কেমন জেনে মানুষ সুবিধা মতো ভোট দিতে আসতে পেরেছেন। এই সব কারণেই জেলায়, বিশেষত আসানসোলে ভোটের হার যথেষ্ট বেড়েছে।”