গরহাজিরা দেখে ক্ষোভ মেয়রের

দেরিতে আসা, আবার তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়া— পুর দফতরের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে এমন আচরণের অভিযোগ রয়েছে অনেক দিন ধরেই। সোমবার, সপ্তাহের প্রথম দিনে আচমকা কুলটি পুরসভা কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে সেই চিত্র দেখলেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বিভিন্ন দফতর ঘুরে কর্মীদের গরহাজিরা ও কাজের পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা, আসানসোল

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:০৫
Share:

দেরিতে আসা, আবার তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়া— পুর দফতরের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে এমন আচরণের অভিযোগ রয়েছে অনেক দিন ধরেই। সোমবার, সপ্তাহের প্রথম দিনে আচমকা কুলটি পুরসভা কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে সেই চিত্র দেখলেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বিভিন্ন দফতর ঘুরে কর্মীদের গরহাজিরা ও কাজের পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন তিনি।

Advertisement

পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই বিভিন্ন সূত্রে মেয়র অভিযোগ পাচ্ছিলেন, বাসিন্দারা ঠিক মতো নাগরিক পরিষেবা পাচ্ছেন না। কর্মীরা অধিকাংশ সময়েই দফতরে গরহাজির থাকছেন। অনেকে আবার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দফতর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ছেন। যার ফলে দূরদূরান্ত থেকে নানা প্রয়োজনে আসা মানুষজন পরিষেবা থকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি সরেজমিনে দেখতে এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হঠাৎ কুলটি পুর কার্যালয়ে হাজির হন মেয়র।

কুলটি পুর কার্যালয়ে শ’দেড়েক কর্মী রয়েছেন। মেয়র এ ভাবে দফতরে হাজির হতে পারেন, আশা করেননি তাঁরা। মেয়রকে দফতরে ঢুকতে দেখেই শোরগোল পড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে জনা কয়েক কর্মী সৌজন্য দেখাতে সামনে এসে দাঁড়ান। জিতেন্দ্রবাবু তাঁদের কাজ করার পরামর্শ দেন। পুরনিগম সূত্রে জানা যায়, মেয়রের কাছে যেমন খবর ছিল দফতরের বেশ কিছু কর্মী নিয়মিত দেরিতে আসেন এবং অনেক আগেই বেরিয়ে পড়েন, তেমনই এমন অনেক কর্মী আছেন যাঁরা দিনের পর দিন দফতরেই আসেন না। অথচ, প্রতি দিনই তাঁদের নামে হাজিরা হয়ে যায়। মাসের শেষে বেতনও তোলেন। এই কর্মীদের মধ্যে কয়েক জন আবার রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বও রয়েছেন। জিতেন্দ্রবাবু প্রথমেই হাজিরা খাতা টেনে নিয়ে দেখেন, সকাল সাড়ে ১১টাতেও হাজিরা খাতায় সই করেননি, এমন কর্মীর সংখ্যা প্রায় ১৫ জন। গরহাজির কর্মীদের নামের পাশে দাগ দিয়ে দেন। এর পরে সেখানে দাঁড়িয়েই নির্দেশ দেন, সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে কর্মীদের হাজিরার তালিকা মেল করে আসানসোলে পাঠিয়ে দিতে হবে।

Advertisement

পুরসভার দায়িত্বে বসার পরেই মেয়র রাজস্ব আদায়ের উপরে জোর দিয়েছেন। এই দফতরটি তিনি নিজের হাতেই রেখেছেন। পুরনিগম সূত্রের খবর, রাজস্ব বাড়ানোর জন্য তিনি নানা পরিকল্পনাও করেছেন। প্রথম বোর্ডসভা ও মেয়র পারিষদদের সভাতেও তিনি নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এ দিনও কুলটি কার্যলয়ে এসে কর আদায়ের দফতরে গিয়ে বিশদ খোঁজখবর করেন। কিন্তু সেখানে কাজের পদ্ধতি দেখে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন। দফতরের ১২ জন কর্মীকে আসানসোলে পুরনিগমের অফিসে বদলির নির্দেশ দেন।

পুর কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন এক বাস্তুকারের কাছে কুলটির বিস্তীর্ণ এলাকায় হোর্ডিংয়ের সংখ্যা জানতে চান মেয়র। কিন্তু, তাঁকে কেউ ঠিক পরিসংখ্যান জানাতে পারেননি। তিনি নির্দেশ দেন, সাত দিনের মধ্যে পরিসংখ্যান জানিয়ে হোর্ডিংগুলির নিলাম ডাকার ব্যবস্থা করতে হবে। এ দিন কুলটি কার্যালয়ে দাঁড়িয়েই মেয়র ঘোষণা করেন, পূর্বতন কুলটি পুরসভা অফিসেই এখানকার তিনটি বরো কার্যালয় তৈরি করা হবে। দিনের শেষে মেয়র বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি কার্যালয়ই পরিদর্শন করছি। পুরসভার সমস্ত কর্মীদের কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য ও গতি আনতে এবং আরও বেশি নাগরিক পরিষেবা দিতে বিশেষ কিছু পরিকল্পনা করছি আমরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement