আসানসোলে তৃণমূল যুবার সভায় শুভেন্দু অধিকারী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: শৈলেন সরকার।
লোকসভা নির্বাচনে আসানসোলে দলীয় প্রার্থীর হারের দায় মাথায় নিয়ে তাঁকে কৃষিমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল। রেলশহরে গিয়ে সেই মলয়েরই পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূলের সদ্যপ্রাক্তন যুব সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, “তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্দিন ও সুদিনে পাশে থেকেছেন মলয় ঘটক। এই শিল্পাঞ্চলে দলের প্রতিষ্ঠাতা তিনি।”
রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে আসানসোলের গির্জামোড়ে সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল যুবা। শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন যুবার সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন মলয় ঘটকও। জি টি রোড ধরে কয়েক হাজার সমর্থকের সঙ্গে মিছিলে হাঁটেন তাঁরা।
শুভেন্দু বলেন, “আসানসোলে আমাদের সংগঠন মজবুত বলেই এত মানুষের সমাগম হয়েছে। মজবুত সংগঠনের পিছনে মলয় ঘটকের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। উনি ভাল সংগঠক।” পরে বক্তব্য রাখতে উঠে অভিষেকও বলেন, “সংগঠন মজবুত আছে বলেই এত কম সময়ে এই মহামিছিল করা সম্ভব হয়েছে।” মলয় অবশ্য বলেন, “তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এখনও পর্যন্ত আসানসোলে যা কিছু হয়েছে, তা মমতার ইচ্ছেতেই।”
শুধু মলয় নয়, তাঁর ভাই অভিজিৎ ঘটকেরও প্রশংসা করেন শুভেন্দু। আসানসোলে তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেনের হারের পরে বর্ধমান জেলা যুব তৃণমূল সভাপতির পদ খুইয়েছেন অভিজিৎ। কিন্তু শুভেন্দুর মতে, “গত পাঁচ বছর যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসেবে এই শিল্পাঞ্চলে দারুণ কাজ করেছেন অভিজিৎ।”
রেলভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে এনডিএ-কে আক্রমণ করতে গিয়ে আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কেই নিশানা করেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “এখান থেকে এক জন গায়ক জিতেছেন। তাঁকে প্রশ্ন করুন, কেন এই রকম হচ্ছে।” এ দিন বিকেলেই আসানসোল থেকে দিল্লির ট্রেন ধরেছেন বাবুল। তাঁর পাল্টা কটাক্ষ, “অভিষেক একদম বাচ্চা ছেলে। আমায় ‘বাবুলদা’ সম্বোধন করলে খুশি হতাম। যদিও সেই সংস্কৃতি তৃণমূলে নেই।” রেলভাড়া বাড়া প্রসঙ্গে বাবুলের ব্যাখ্যা, “লক্ষ্যে স্থির থাকতে গেলে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেমন, লং জাম্প দিতে গেলে প্রথমে দশ পা পিছিয়ে এসে তার পরে দৌড়তে হয়, বা লক্ষ্যভেদ করতে গেলে ধনুকের তীরকেও পিছন দিকে টেনে তার পরে ছাড়তে হয়। মোদীজির লক্ষ্য অভিষেক ঠিক বুঝবে না।” তৃণমূলের সভায় দুই সাংসদ শুভেন্দু এবং অভিষেক অবশ্য জানিয়েছেন, ৭-১৪ জুলাই অধিবেশন চলাকালীন তাঁরা সংসদের ভিতরে ও বাইরে প্রতিবাদ-আন্দোলন করবেন।