চরসাহাপুরে। নিজস্ব চিত্র
মোড়ে মোড়ে পুলিশি টহল চলছে। ‘ড্রোন’ উড়িয়ে নজরদারিও শুরু হয়েছে। কিন্তু তার পরেও ‘লকডাউন’ ভাঙার প্রবণতা বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার নানা এলাকায়। বুধবার কাটোয়ার চরসাহাপুর গ্রামে ভিড় জমিয়ে কিশোর-যুবকের দলকে ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠতে দেখা গিয়েছে। গ্রামের অনেকে জমায়েত করে গাছতলায় বসে খেলাও দেখেন। বেশিরভাগের মুখেই ‘মাস্ক’ ছিল না।
এ দিন কাটোয়া শহরের নানা আনাজ বাজারের সামনে ভিড় জমতে দেখা যায়। আঢাকা মুখেই মুদির দোকানে আসেন অনেকে। অনেক ক্ষেত্রে পারস্পরিক দূরত্বও বজায় রাখা হয়নি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের একাংশের। এ দিনও ‘লকডাউন’ বিধি ভাঙার অভিযোগে বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন বাজার, কাছারি রোড, নিচুবাজার এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে। দাঁইহাটের বাজার এলাকাতেও একই রকম ছবি দেখা যায়। দুই শহরেই নানা পাড়ায় মানুষজনকে বেরিয়ে জটলা করতে দেখা গিয়েছে। পুলিশের গাড়ি দেখলেই বাড়িতে ঢুকে পড়েন অনেকে। পুলিশ চলে যেতেই ফের একই ছবি।
এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ চরসাহাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভাগীরথীর ধারে একটি মাঠে বেশ কিছু যুবক ও কিশোর জমায়েত হয়েছেন। পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলার আবেদনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই তাঁরা ক্রিকেট খেলতে নেমে পড়েছেন। কারও মুখে ‘মাস্ক’ নেই। ছবি তুলতে দেখে কেউ-কেউ মাঠ ছেড়ে চলে যান। কেউ গামছা দিয়ে মুখ ঢাকার চেষ্টা করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবকেরা দাবি করেন, টানা ‘লকডাউন’-এ আর বাড়িতে থাকতে ভাল লাগছে না। তাই গ্রামের পরিচিতদের সঙ্গে খেলতে এসেছেন। তাঁদের আরও দাবি, ‘‘আমাদের এলাকায় বাইরের লোক কেউ আসেননি। তাই করোনা সংক্রমণের ভয় নেই।’’ পাশাপাশি বসে খেলা দেখছিলেন কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি। তাঁদের দাবি, এই এলাকা ‘রেড জ়োন’-এ পড়েনি। তাই ‘লকডাউন’-এর কড়াকড়ি না মানলেও চলবে বলে তাঁদের ধারণা।
মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘করোনা রুখতে গ্রাম বা শহর, সব জায়গাতেই ‘লকডাউন’ মানতে হবে। বাড়ির বাইরে রেরোলে ‘মাস্ক’ পরাও বাধ্যতামূলক।’’ তিনি জানান, পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে। নির্দেশ অমান্য করার ঘটনা চোখে পড়লেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।