ডিমের দাম বাড়ার জন্য পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ সিডিপিও অফিসে স্মারকলিপি দিল সিটু অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গ আইসিডিএস কর্মী সমিতি। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
খোলা বাজারে ডিমের দর সাড়ে সাত থেকে আট টাকা। কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু, প্রসূতি এবং অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য ডিম দেওয়া হয়, তার জন্য সরকারের বরাদ্দ সাড়ে ছ’টাকা করে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ফাঁপরে পড়েছেন বলে অভিযোগ পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীদের।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ২,৮৪৫টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। ছ’মাস থেকে ছয় বছরের এক লক্ষ ২৬ হাজার ৮১৯ জন শিশু এবং ১৯,৯৭৮ জন প্রসূতি ও অন্তঃসত্ত্বা এই কেন্দ্রগুলি থেকে পরিষেবাপেয়ে থাকেন।
কিন্তু এই পরিষেবা দিতে গিয়েই সমস্যা হচ্ছে। সিটু অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতির পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সম্পাদক চন্দনা দাস জানান, আনাজ থেকে শুরু করে জ্বালানির বরাদ্দ, সব নিয়ে সমস্যা আছে। তার উপরে, সমস্যা তৈরি হয়েছে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায়। প্রতিটি কেন্দ্রে সোম থেকে শনিবার অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতিদের গোটা ডিম দেওয়া হয়। শিশুদের সপ্তাহে তিন দিন গোটা ও তিন দিন অর্ধেক ডিম দেওয়া হয়। চন্দনার বক্তব্য, “ডিমের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। জেলার প্রত্যন্ত এলাকার কর্মীরা ডিমের ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছ থেকে ডিম কিনতে গেলে, পরিবহণ খরচ যোগ করে আট টাকা খরচ হয়। কোথা থেকে আসবে এই টাকা?” সংগঠনটির সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিটি ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের প্রজেক্ট অফিসে বিক্ষোভ দেখানোর পরে দাবিপত্র জমাদেওয়া হচ্ছে।
এআইটিউসি অনুমোদিত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ইউনিয়নের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি কবিতা রায় জানান, আদতে কর্মীদের নিজের বেতন থেকে টাকা খরচ করে সমস্যা মেটাতে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সহায়িকা ও আশাকর্মী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক রুমি বক্সীও জানাচ্ছেন, ডিমের দাম বৃদ্ধিটা অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৮ জানুয়ারি কলকাতায় তৃণমূল ভবনে তাঁদের সংগঠনের বৈঠক আছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
এ প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জেলা প্রজেক্ট অফিসার (ডিপিও) পূর্ণেন্দু পৌরাণিক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান, পুরো বিষয়টি ঠিক করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা আছেন। তাঁরা নিয়মিত সমীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেন। তা ছাড়া, ডিমের দাম প্রতি বছরই শীতকালে কিছুটা বাড়ে। আবার, শীত পেরোলে তা কমেও যায়।