Crime

যুবতীকে কুপিয়ে খুন, বেপাত্তা স্বামী-সহ ৩ জন

রবিবার রাতে মঙ্গলকোটের মাহার্তুবা গ্রামে রক্তাক্ত দেহ মেলে শাহ রেজিনা বেগমের (৩০)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ০১:২৭
Share:

মেয়েকে হারিয়ে। নিজস্ব চিত্র

বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে ‘নির্যাতন’ চলত। সম্প্রতি স্বামীর পরকীয়ার কথা জেনে প্রতিবাদ করায় যুবতীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার রাতে মঙ্গলকোটের মাহার্তুবা গ্রামে রক্তাক্ত দেহ মেলে শাহ রেজিনা বেগমের (৩০)। সোমবারই মৃতার বাবা বিজাউল হক মেয়েকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জামাই শাহ মিরাজ হোসেন, শ্বশুর শাহ এমারুল হোসেন ও শাশুড়ি খায়েমুন্নেসা ওরফে মীরা বিবির নামে। তাঁর অভিযোগ, বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য ক্রমাগত চাপ দেওয়া হত। তার মধ্যে জামাইয়ের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জেনে ফেলায় খুন করা হয়েছে মেয়েকে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত তিন জন বেপাত্তা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘ওই বধূ খুনের ব্যাপারে স্বামী-সহ তিন জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে । দেহ ময়না-তদন্ত করার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতার থানার কালিটিকুরি গ্রামের রেজিনার সঙ্গে বছর দশেক আগে মঙ্গলকোটের মাহার্তুবা গ্রামের শাহ মিরাজ হোসেনের বিয়ে হয় । তাঁদের নয় ও সাত বছরের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। মৃতার বাবা পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, বিয়ের বছরখানেক পর থেকেই জামাই ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা অজুহাতে মারধর করত তাঁর মেয়েকে। প্রায়ই বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দেওয়া হত। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা পারিবারিক বিবাদ মেটানোর জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি, দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের গলায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। রক্তক্ষরণে মেয়ে মারা যায়। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি করছি।’’

এ দিন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে মৃতার দাদা শেখ রবিউল জানান, শাহ মিরাজ কলকাতায় সোনার দোকানে কাজ করেন। সপ্তাহ অন্তর বাড়ি আসতেন তিনি। বেশ কয়েকবছর ধরেই তাঁর পরকীয়া চলছিল বলেও তাঁর দাবি। রবিউল বলেন, ‘‘সব জেনেও পারিবারিক সম্মানের কথা ভেবে বোন মুখ বুজে সহ্য করত। তার পরেও বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মারধর করত। প্রতিবাদ করাতেই ওরা সবাই মিলে বোনকে নৃশংস ভাবে খুন করেছে।’’ তিনি জানান, রাত ১১টা নাগাদ প্রতিবেশীরাই তাঁদের ও পুলিশের খবর দেন। ঘরের মেঝেতে ওই যুবতীর রক্তাক্ত দেহ পড়েছিল।

পুলিশ জানায়, মৃতার গলায় ধারালো অস্ত্রে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কাটোয়া হাসপাতালে ময়না-তদন্ত করাতে নিয়ে যাওয়া হলে ওই ক্ষত দেখে কী ভাবে খুন হয়েছে তা নিয়ে সংশয় দেখা যায়। পরে উচ্চ পর্যায়ের ময়না-তদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয় তাঁকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement