এই বাড়ি থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। নিজস্ব চিত্র।
ফাঁকা বাড়িতে কল্পনা পাশি (৪৩) নামে এক মহিলাকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার আসানসোল দক্ষিণ থানার তিন নম্বর ঘুষিক কোলিয়ারি লাগোয়া মুসলিমপাড়ার ঘটনা। সোমবার নিহতের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় বহু বছর ধরে কল্পনা ছেলে ও বৌমার সঙ্গে থাকতেন। ছেলে ও বৌমা তিন দিন বাড়িতে ছিলেন না। পড়শিরা পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ পাড়ার কল থেকে কল্পনাকে শেষ বারের মতো জল নিতে দেখা গিয়েছে। সন্ধ্যায় এক পড়শি খোঁজ নিতে তাঁর বাড়ি যান। তিনিই দেখেন, দরজা হাট করে খোলা। কিন্তু ঘরের ভিতরে আলো জ্বলছে না। তিনি দেখেন, কল্পনা মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছেন। ঘরের আলো জ্বালার পরে বোঝা যায়, গোটা ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
খবর পেয়ে অন্য লোকজন ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্পনার গলার অর্ধেক অংশ কুড়ুল দিয়ে কোপানো হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পোশাকও ছিল অবিন্যস্ত।
পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়। সোমবার সকালে সেখানেই দেহের ময়না-তদন্ত হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সেনাওয়ানে জানান, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে কল্পনার ছেলে সন্দীপ জানান, শুক্রবার স্ত্রীর সঙ্গে তিনি ধানবাদে এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রবিবার ফোনে বিষয়টি
জানতে পারেন।
কী কারণে এই ঘটনা, তা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে নিহতের ছেলে সন্দীপ বলেন, “পুলিশকে সব জানিয়েছি। ঘটনার তদন্ত করছেন ওঁরা।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মহিলা বাড়িতে একা আছেন জেনে চুরি করার জন্য দুষ্কৃতী ঢুকেছিল। কিন্তু মহিলা তাঁকে চিনতে পেরে যান। এই পরিস্থিতিতেই কুড়ুল দিয়ে আঘাত করা হয়। দেহের পাশ থেকে রক্তমাখা কুড়ুলটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তিনি পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
খুনের খবর পেয়ে এলাকায় যান স্থানীয় ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি মীনা কুমারী হাঁসদা। তিনি জানান, আগে কখনই এই পাড়ায় এমন ঘটনা ঘটেনি। এলাকায় নিয়মিত পুলিশি টহলের জন্য আবেদন করেছেন তিনি।