নতুন জেলার প্রস্তুতি

শিল্প-দফতরে কেন নিয়োগ কম, সরব বাম

নতুন জেলায় আয়তন কমছেই দুর্গাপুর মহকুমার। আওতা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বুদবুদ থানা এলাকা। সরকারি এক নির্দেশিকা অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানের মধ্যে পড়তে চলেছে বুদবুদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৬
Share:

নতুন জেলায় আয়তন কমছেই দুর্গাপুর মহকুমার। আওতা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বুদবুদ থানা এলাকা। সরকারি এক নির্দেশিকা অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানের মধ্যে পড়তে চলেছে বুদবুদ। এরই মধ্যে আবার শিল্পাঞ্চল এলাকা নিয়ে তৈরি হতে চলা পশ্চিম বর্ধমান জেলার জন্য প্রশাসনের শিল্প দফতরে তুলনায় কম কর্মী নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। জেলা পরিষদ ভাগ হবে কি না, প্রশ্ন উঠছে সে নিয়েও।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল সদর মহকুমায় ৯টি থানা এবং দুর্গাপুর মহকুমার ৭টি থানা নিয়ে গড়ে উঠছে নতুন জেলা। বর্ধমান জেলা পরিষদে সদস্য সংখ্যা ৭৫। এর মধ্যে বারাবনি থেকে কাঁকসা পর্যন্ত মোট সদস্য ১৭ জন। তাঁদের তিন জন আবার কর্মাধ্যক্ষ— বারাবনির উত্তম চক্রবর্তী, পাণ্ডবেশ্বরের নরেন চক্রবর্তী এবং অন্ডালের রূপেশ যাদব। নতুন জেলার অধিকাংশ এলাকাই পড়ছে পুরসভার মধ্যে। আসানসোল পুরসভার এলাকা আগেই বেড়ে গিয়েছে। দুর্গাপুর পুরসভার এলাকা বৃদ্ধির প্রস্তাবও রাজ্যের বিবেচনায় রয়েছে। ফলে, জেলা পরিষদের কাজের পরিসর নতুন জেলায় অনেক কমবে।

৬ মার্চ বর্ধমান জেলা পরিষদ ৮৯৪ কোটি ১১ লক্ষ টাকার বাজেট পেশ করে। তার মধ্যে আসানসোল-দুর্গাপুরের বিভিন্ন প্রকল্পের বাজেটও ধরা হয়। জেলা পরিষদ ভাগ হবে কি না, সে নিয়ে এখনও রাজ্য সরকারের তরফে কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা আসেনি। পরের পঞ্চায়েত ভোট ২০১৮ সালে। শাসকদলের একাংশের দাবি, তার জেলা পরিষদ ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা কম। শনিবার কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের নেতাদের বৈঠকে এ ব্যাপারে কোনও আলোচনা হয়নি বলেও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। নতুন জেলার বাসিন্দা হয়েও পশ্চিমের তিন কর্মাধ্যক্ষকে কাজ করতে যেতে হবে বর্ধমানেই। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘এমনটা এ রাজ্যে সম্ভবত প্রথম।’’

Advertisement

মূলত শিল্পাঞ্চল নিয়ে গড়া নতুন জেলায় যে ২৪৫টি পদে নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি সরকারের তরফে জারি করা হয়েছে, সেখানে শিল্প সংক্রান্ত দফতরে নিয়োগ তুলনায় অনেক কম। ‘মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ’ দফতরে এক জন এবং জেলা শিল্পকেন্দ্রের তিন জন আধিকারিক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। শ্রম দফতরে তিনটি পদে নিয়োগ হচ্ছে। কিন্তু ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে ৫১, কৃষি দফতরে ১২, কৃষি বিপণন দফতরে ৪, উদ্যান পালন বিভাগে ৩ এবং মৎস্য দফতরে ৩টি পদে নিয়োগ হবে। শিক্ষা বিভাগে মাধ্যমিক ও প্রাথমিকে এক জন করে জেলা স্কুল পরিদর্শক-সহ একাধিক সহকারী পরিদর্শক ও কর্মী মিলিয়ে মোট ৩১ জনের পদ তৈরি করা হয়েছে।

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা দুর্গাপুরে বাম সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক পঙ্কজ রায় সরকারের কটাক্ষ, ‘‘গত কয়েক বছরে অধিকাংশ কারখানায় ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে। অচিরেই বাকিগুলিও উঠে যাবে। তাই হয়তো শিল্প বিষয়ক দফতরে নিয়োগের এই হাল!’’ আয়তন কমায় দুর্গাপুর মহকুমার গুরুত্ব কমছে বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘দুর্গাপুরের মানুষের দাবিকে গুরুত্ব না দেওয়া এবং শিল্প বাঁচানোর ডাক দিয়ে রবিবার থেকে এলাকায়-এলাকায় আন্দোলন হবে।’’

তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় যদিও বামেদের কোনও প্রশ্ন আমল দিতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নতুন জেলা নিয়ে মানুষের এত উৎসাহ, আগের তুলনায় অনেক কাছে জেলা সদর হচ্ছে। দুর্গাপুরে অতিরিক্ত জেলাশাসক বসবেন, সুবিধে হবে শহরবাসীর। বামেরা যা করতে পারেনি, আমাদের সরকার তা করে দেখাল। সে জন্যই ওরা কুৎসা করছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement